সংগি

তাহিয়া মাহবুব
ওপাশে ফোন বাজে,
আমি দৌঁড়ে ছুটি, দেখি মরিচিকা
হাতছানি দেয় ভাংগা দরজায়।
আমি আষ্টেপৃষ্ঠে বুকে চেপে থাকি না বলা শত শত কথার খই।
এবার পাতা ওল্টাই,
পড়ি রবি ঠাকুরের নির্ঝরের স্বপ্নভংগ, ঠিক আবার
অন্যদিকে নির্মলেন্দু গুনের "তুই কি আমার দুঃখ হবি?"
চালিয়ে গেলাম বেশ কিছু লাইন।
বসছেনা মন!
আমার হাতে কলম, সামনে সাদা পৃষ্ঠা-
বারবার পাতা ওল্টাই, বুঁঝতে চাই জীবনানন্দের বললতা সেন খোঁজার আকুলতা।
আশাহত হই- কারণ এ দহন আমার মত তীব্র নয়,
বরং মসৃণ ভয়ানক,
যান মানসিক অস্থিরতা অস্থিমজ্জায় পৌঁছে যাচ্ছে।
ধরলাম নজরুলের হ্রৃদপিন্ডের কাঁপন তোলা "কারার ওই,লৌহ কপাট, ভেংগে ফেল,,,,"
নাহ, বনছেনা এই চঞ্চলতায়।
তাহলে কি রবি আমায় সুখ দেবে?
কানে গুঁজে দিলাম "আমার সকল ছেড়ে বসে আছি সর্বনাশের আশায়,আমি,তার লাগি,পথ চেয়ে থাকি পথে যে জন,ভাসায়...!"
নাহ নাহ! হচ্ছেনা!
বনছেনা কোনকিছুই।।
এই দূর্বিবাকে কলম খুঁচে চেয়ে দেখি
তোমার নাম আগন্তুক হয়ে দৌঁড়ে বেড়ায় আমার লেখায়!
এ আমার অসুখ,
নিজস্ব, একান্ত, ব্যাক্তিগত অমর ব্যাধি।
সাদা শাড়ি নীল পাড়ে এলোকেশে ছুটে যাই ব্যলকনিতে।
ওইত, এক জোড়া অস্পৃশ্য চাহনি বুকের কাঁপনে ঝড় তোলে।
আমি গুনগুন করি, ছোট ছোট ভাংগা গলায় গেয়ে ঊঠি "সখি ভাবনা কাহারে বলে, সখি যাতনা কাহারে বলে..."
ঠিক ওই সময় কবির সুমন চেঁচিয়ে ওঠে 'শেষ পর্যন্ত তোমাকে চাই।"
হারাতে যেয়েও রুপমের লিরিক্সে সম্বিত ফিরে
"এই একলা ঘর আমার দেশ
আমার একলা থাকার অভ্যেস
আমি কিছুতেই ভাববো না তোমার কথা
বোবা টেলিফোনের পাশে বসে
তবু গভীর রাতের অগভীর সিনেমায়
যদি প্রেম চায় নাটুকে বিদায়
আমি আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছি আবার
দেখি চোখ ভিজে যায় কান্নায়।
না না কাঁদছিনা, তোমায় ভাবছিনা,
মনে পড়ছেনা তোমাকে"।
সব বন্ধ, অন্ধকার, আঁধার, বিমূর্ত নীরব।
লেখা বন্ধ করে ঘরে ফিরে দেখি অসহ্য শূণ্যতা।
এই শূন্যতায় বিশুদ্ধ পপরিপূর্ণতা আমার
নিত্যতার সংগি।
-তাহিয়া মাহবুব