‘অনির্বাচিত সরকার এলে সংবিধান অশুদ্ধ হবে’

বাংলাভাষী ডেস্কঃঃ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমাদের স্বাধীনতা এবং তৎপরবর্তী বঙ্গবন্ধুর দেওয়া সংবিধান— অনির্বাচিত সরকার এলে সেটি অশুদ্ধ হবে।

বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকালে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

দেশে অনির্বাচিত সরকার নিয়ে আসার পেছনে যারা কলকাঠি নাড়েন, তাদের কঠোর সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী।

সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমাদের দেশে খুব জ্ঞানী-বিজ্ঞানী আছেন। তাদের মুখে শুনলাম, দু-চার বছরের জন্য যদি অনির্বাচিত সরকার আসে, তাহলে তো মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবে না। কারা এগুলো বলেন— সেটা আপনারা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন। অনির্বাচিত সরকার তো আপনারা দেখেছেন। এখানের ছাল ওখানে নিয়ে নানাভাবে দল করার চেষ্টা করেন, রাজনৈতিক নেতাদের খারাপভাবে উপস্থাপন করে অপকর্মের চেষ্টাও করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘মহাভারত অশুদ্ধ হবে না, অশুদ্ধ হবে আমাদের সংবিধান। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমাদের স্বাধীনতা এবং তৎপরবর্তী বঙ্গবন্ধুর দেওয়া সংবিধান, অনির্বাচিত সরকার এলে সেটি অশুদ্ধ হবে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জেলায় জেলায় বাংলা একাডেমি যে বইমেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এটি সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। তাছাড়া আমরা সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মকে যত বেশি আকর্ষণ করতে পারব, তত বেশি তরুণ প্রজন্মকে আমরা মাদক থেকে দূরে রাখতে পারব। সেই সঙ্গে তাদের যথাযথ মেধার বিকাশও করবে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের বইগুলো অডিও করতে পারলেও হয়ত আমরা আরও বেশি পাঠক পাব। কারণ এখনকার যুগে বইখুলে পড়তে অনেকেই চায় না। ডিজিটালাইজ করা হলে, যে কোনো জায়গাতে যে কেউ শুনতে, পড়তে পারবে।

বক্তব্য শেষে পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা মেলার বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ পরিদর্শন করেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত কয়েকটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন এবং ১১টি ক্যাটাগরিতে ১৫ জন বাংলা একাডেমি ২০২২ পুরস্কার তুলে দেন।

বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী কেএম খালিদ, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

এ সময় মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সরকারের পদস্থ কর্মকর্তা ও ভাষাপ্রেমী-বইপ্রেমীরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় সাড়ে ১১ লাখ বর্গফুট জায়গায় এবারের বইমেলার জন্য ৬০১টি প্রতিষ্ঠানকে ৯০১টি ইউনিট (স্টল) বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যা গত বছর ছিল ৫৩৪টি প্রতিষ্ঠানের জন্য ৭৭৬টি স্টল। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ১১২টি প্রতিষ্ঠানকে ১৬৫টি স্টল এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৪৮৯টি প্রতিষ্ঠানকে ৭৩৬টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

মেলা সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে মেলা। তবে ছুটির দিনে মেলা খোলা থাকবে বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। এবং রাত সাড়ে ৮টার পর সব প্রবেশপথ বন্ধ থাকবে। এ ছাড়া প্রতি শুক্র ও শনিবার বেলা ১১টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত চলবে ‘শিশুপ্রহর’। সেই সঙ্গে শুক্রবার দুপুর ১টা থেকে ৩টা এবং শনিবার ১টা থেকে ২টা পর্যন্ত বিরতি।

তবে ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে মেলার সময়সূচিতে কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে। এদিন থেকে সকাল ৮টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত গ্রন্থমেলা খোলা থাকবে।