অমৃত সুধা মায়ের ভাষায়

অমৃত সুধা মায়ের ভাষায়
লাকী তাহামিনা 
সেই যে প্রথম ডাকে যেদিন মা ডেকে ছিলেম,
সে আমার প্রথম কথা !
এরই নাম আমার মায়ের ভাষা !
তার পর কত কথা !
ক্ষুদা , তৃষ্ণা , হাসি কান্না, রাগ , অভিমান 
ভালোবাসা সব মিটিয়েছে আমার কথা !
ছন্দে ছন্দ তুলে বুকের মাঝে ঢেউ খেলে ,
কতো কথা হয় বলাবলি  , 
বাংলা বর্ণের হয় খেলাখেলি ,
সে তো আমারই মায়ের শেখানো বুলি 
তারই নাম আমার মাতৃভাষা ।
সহজ সরল গায়ের কথা , কৃষক , জেলে , 
তাঁতি , কামার , কুমোর সবারই জীবন গাঁথা ।
যত জ্ঞানী গুনীজন আছে এ বাংলায় ,
আছে ছড়িয়ে বিশ্বের বুকে 
সকল জনে মনে , 
হয় মহীয়ান বাংলার সুর শুনে ।
ততটা খেলে কি মন বিজাতীয় ভাষায় ?
যতটা খেলে মায়ের কথার অমৃত সুধায় !
পাখীর কুঞ্জণ কেড়ে নিলে হায় 
বাগানের ফুল কি আর ফোটে ?
এসেছিল হায়েনার দল কণ্ঠ আমার 
কেড়ে নেবে বলে !
সেই দিন ভাইয়ের হৃদয়ে স্পর্শেছিল 
বোবা কান্নার অনুভুতি ! 
বিজাতীয় ভাষার ঝনঝন শব্দ 
বুকের মাঝে নিক্ষিপ্ত বিষাক্ত তীরের মতো 
আঘাত হেনেছিল বুঝি !
মিছিলে মিছিলে বুলেটের আঘাতে 
রক্তাক্ত হয়েছিল রাজপথ 
রক্তের দামে দিয়েগেছে মোর
কন্ঠের সুরেলা ধ্বনি !
রফিক, শফিক , সালাম , জব্বার , বরকত ,
ওগো শোন তোমাদের বলি 
আজি প্রভাতের রবির কিরণ , 
লাল পলাশের রঙ , হৃদয়ের ভালোবাসা, 
শ্রদ্ধাঞ্জলী চরনে তব রেখে যাই ! 
ভুলি নাই কখনও যাবে না ভোলা ,
প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ,
তোমাদের তরে গেয়ে যাবে গান ।
দিয়ে যাবো নতুনের কাছে তোমাদের ইতিহাস ,
গেঁথে যাবো হৃদয়ে মায়ের ভাষার টান।
সন্তান মোর বাংলায় গাইবে গান , 
বাংলার সংস্কৃতি , বাংলার মাটি , 
হৃদয়ের মানসপটে করবে ধারণ 
রচিত হবে মহাকাব্য, মহাবিশ্বময় ।
বিশ্বের বুকে হবে আপন স্বত্বার অধিকারী ,
তোমাদের কাছে এ আমার প্রতিশ্রুতি ।