আমাকে খুঁজো

আমাকে খুঁজো

আব্দুছ ছালাম চৌধুরী 

    

আজ বিকেলটা বড়ই তৃষ্ণা কাতর ছিলাম। পরিচ্ছন্ন জলের আশায় এদিক-ওদিক হন্য হয়ে ঘুরছি। ইন্টারনেটের দুর্বলতার কারণে অনেক সময় আমরা সিগনাল পেয়েও পাই না। কিছুদূর যেতে না যেতেই একটা হোটেলের দেখা, সেখানে লেখা ছিল (Wi-Fi) ওয়াইফাই ফ্রি—

অজান্তেই ঠোঁটে হাসি এলো,

একটা পেপসি পান করবো বলে ভেতরে গেলাম। 

ছোট্ট একটা ছেলে এসে স্যার কি খাবেন? উত্তরে বললাম,,, আগে Wi-Fi) ওয়াইফাই এর পাসওয়ার্ড দাও, আর একটা পেপসি,,, 

ইশারার দেখিয়ে দিলো,,, পাসওয়ার্ড দেয়ালে টাঙানো। 

বাহ বাহ বলেই পাসওয়ার্ড সেট করে পেপসির মুখে দিলাম।

সাথে সাথে ফেইসবুক খুলতেই চোখ পড়লো-- আমাকে খুঁজো,,

লিখেছেন কবি নুরজাহান শিল্পী। পড়তে পড়তে খুঁজতে লাগলাম, 

রাতের আকাশে খুঁজো আমাকে 

   শুকতারাটা চেয়ে চেয়ে 

নীলিমার নীলে ক্ষীণদৃষ্টির আলোকে 

    রূপালী চাঁদ নক্ষত্রের পাশে ,

সেই দেখাবে আলো আঁধারের বুক চিরে 

     অচেনা ,অজানা পথ দেখায়ে 

নক্ষত্ররাজীর অনিন্দ্য আলোয় ,

    হয়তো আমি থাকবো অনেক দূরে 

আমাকে পাবে তুমি তারাদের ভীড়ে |

   গহীন দু' চোখে আবেগী জল ছুঁয়ে ,

চাঁদের ম্লান আলোয় ,

   তুমি যদি বুঝতে পারো তবে ,

আমায় আশীর্বাদ করো 

      অনন্ত জীবনে যেনো আমি 

 তোমারই থাকি বন্ধু চিরন্তন ।

----------------------------

প্রথমেই ভাবলাম কিছু শব্দ মিসিং লাগছে, একটু যুক্ত করি। সাহস করে করলাম, এবং পরক্ষণেই লেখিকার বরাবরে পৌঁছে দিয়ে বললাম—

কবি অপরাধ করে ফেলেছি। মনে হয় স্বচ্ছতার জন্য হলেও একটু স্পষ্ট প্রয়োজন। প্রায় ত্রিশ মিনিট পরে উত্তর দিলেন, প্রিয় কবি লেখার মন্তব্য কলামে পোস্ট করুন।

আমি বললাম,,, 

সরি কবি— যেহেতু শব্দের যোজন বিয়োজন আছে, তাই লোকে মন্ত্র বলবে।

আমি বরং অন্যভাবে চেষ্টা করি,, তাই এই কলাম—

তার আগে আমি কি লিখলাম—তা দেখে নিন।

#

রাতের আকাশে খুঁজো আমাকে

খুঁজো; ঐ শুকতারার দিকে চেয়ে চেয়ে

খুঁজো; আমাকেই খুঁজো,

খুঁজো; নূরজাহান শিল্পী নামক তারকাটিকে।

প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে খুঁজো নিশীথ অবধি, খুঁজো—

বর্ণহীন আকাশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে।

তাকাও; 

মেঘের আড়ালে তাকাও, 

তাকাও—নীলিমার নীলে, ক্ষীণদৃষ্টির আলোক সজ্জায়

আমি রূপালী চাঁদ আর নক্ষত্রের ঠিক পাশেই।

যে দেখবে সেই খুঁজে পাবে—

পাবে আলো আঁধারের বুক চিরে——দীপ্তমান।

খুঁজো; নূরজাহান শিল্পী নামক তারকাটিকে।

যারা আমাকে দেখবে, অচেনা অজানা পথে খুঁজে পাবে

দেখবে নক্ষত্ররাজীর অনিন্দ্য আলোয়।

হয়তো, আমি থাকবো তোমার হতে অনেক দূরে 

তবুও আমাকে পাবে তুমি শত-শত তারাদের ভীড়ে। 

আমি নিবেদিত;

খুঁজো; নূরজাহান শিল্পী নামক তারকাটিকে।

খুঁজো, হৃদয় গহীনে 

দু চোখের আবেগী জলে আমি তোমার বক্ষ ছুঁইবো।

চাঁদের আলো ম্লান হলেও আমার সুপ্ত বাসনা ম্লান হবে না—

যদি অনুধাবন করতে পারো, তবে নিরন্তর পথ চলায় এগিয়ে আসো;

অনন্ত কাল আমাকে ঘিরে থাকো, থাকো স্বপ্নের অলিন্দে—

শুধু তোমার বন্ধু হয়ে, হৃদ্যতার পরতে পরতে, স্বপ্নের সাঁকো দিয়ে পথচলা হোক চিরন্তন।

যদি

আমার নিঃশ্বাসে তোমার স্পন্দন থাকে

তবেই 

খুঁজো; নূরজাহান শিল্পী নামক তারকাটিকে।

-----------------

আমি মনে করি, একেকজন কবি একেকটি তারা একেকটি নক্ষত্র। কবি নুরজাহান শিল্পী, তার লেখনী তার সুপ্ত বাসনা আজ 

"আমাকে খুঁজো" কবিতায় লিখে জানিয়েছেন। তার মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হোক। তার ভক্তের সংখ্যা অগণিত। তার শুভাকাঙ্ক্ষী আকাশ সম। তার পাঠক শুভানুধ্যায়ী বিশাল। তার কবিতায় উন্নত শব্দের গাঁথুনি থাকে। তার চিন্তা চেতনা বাংলা ভাষা তথা বাংলা সাহিত্যকে একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে আমি আশাবাদী। 

তার কবিতার প্রাণ খুঁজতে খুঁজতে আমার তিনটি পেপসি খাওয়া হলো। পেপসির সাথে কবিতা পাঠে ও আমার তৃষ্ণা নিবারন হলো। তারা মণ্ডলীর কিরণে ঝলমলিয়ে উঠে তার নাম, তার কবিতা -------আমাকে খুঁজো।