আমার কিছু খুচরো শোক

আমার কিছু  খুচরো শোক
 গোলাম কবির 
হৃদয়ে প্যাপিরাসের পাতায় প্রতিদিন
 কতো কবিতা লিখি প্রকাশ হয়না যা   কোনোদিনই! অভিমানে সেইসব কবিতারা
 আত্মহত্যা করে আলোকরশ্মি পেলে
 যেভাবে পতঙ্গরা উড়ে উড়ে আসে
 আত্মহননের জন্য না বুঝেই তেমনি করে।
 পরে আর কখনো মনে পড়ে না সেইসব
 অমল কবিতা গুলো অথচ আমার শোক
 সেইসব কবিতার জন্য! ছোটোবেলায় 
যারা একসময় আমার সহপাঠী কিংবা বন্ধু
 ছিলো কিন্তু বড়োবেলায় আর কোনোদিনই
 তাদের সঙ্গে দেখা হয়নি কিংবা বলা যায়
 যাদের আমি হারিয়ে ফেলেছি আমার
 শোক তাদের না পাবার জন্য! 
এমনকী ১৯৭১এর যুদ্ধদিনে হঠাৎ করেই
 তিনদিনের জন্য যে শরণার্থী পরিবারটি আমাদের বাসায় আশ্রয় নিয়েছিলো আমার
 বয়সী তাদের কন্যাটির সঙ্গে আমার খুব
 ভাব হয়ে গিয়েছিলো ওর জন্য আমার 
এই বয়সেও কষ্ট হয়, ওরা কেমন আছে কিংবা আদৌ বেঁচে আছে কী না জানিনা,
 তার চলে যাওয়া সময়ের কান্না আমার
 হৃদয়কে এখনো স্পর্শ করে, 
ওর জন্য একধরণের দুঃখবোধ কাজ করে আমার ভিতরে। তারপর আরো কষ্ট পাই
 সেইসব নিরীহ ঘাসফড়িঙ, যারা আমার
 হাতে নিহত হয় খেলাচ্ছলে প্রেসিডেন্ট
 ইয়াহিয়া খানের প্রতি আমার অক্ষম ক্রোধ নিবারণের জন্য, ওদের জন্য এখন 
আমার শোক উথলে ওঠে প্রায়ই!