আয়ারল্যান্ডের অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তন

বাংলাভাষী ডেস্কঃঃ

যেখানে মনে করা হয়েছিল খেলা তৃতীয় দিনের প্রথম ঘণ্টাই পার হবে না, নতুবা সর্বোচ্চ প্রথম সেশন, সেখানে আইরিশরা চতুর্থ দিনে নিয়ে গেছে টেস্টকে। বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণকে ভোতা বানিয়ে দিয়ে লরকান টাকারের (১০৮) সেঞ্চুরির সঙ্গে হ্যারি টেক্টরের (৫৬), ম্যাকব্রিনের (অপরাজিত ৭১) হাফ সেঞ্চুরিতে আয়ারল্যান্ড ইনিংস পরাজয় এড়িয়ে ১৩১ রানের লিড নিয়ে খেলাকে চতুর্থ দিন নিয়ে গেছে। তাদের সংগ্রহ ৮ উইকেটে ২৮৬ রান। এই লিড আরও বাড়বে। এখন উল্টো বাংলাদেশকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছে তারা!

বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ডের একমাত্র টেস্টের তৃতীয় দিন পিচের পরিবর্তন ছিল অবাক করার মতো। প্রথম দুই দিন যেখানে উইকেট পড়েছে ১২টি করে ২৪টি, সেখানে তৃতীয় দিন উইকেট পড়েছে মাত্র ৪টি। রান উঠেছে ২৫৯।

প্রথম দুই দিন স্পিনারদের দাপট ছিল সুস্পষ্ট। তৃতীয় দিন না স্পিনার, না পেসার। সবই ছিল নখদন্তহীন। দিনভর ব্যাটসম্যানদের প্রাধান্য ফুটে উঠে সুস্পষ্ট। দিনের প্রথম সেশনে আইরিশরা যা একটু রক্ষণাত্মক ছিল। এই সেশনে রান উঠেছিল মাত্র ৬৬। এর পরের দুই সেশনে ব্যাটসম্যানরা খোলস ছেড়ে বের হয়ে এসে রানের গতি বাড়িয়ে দেন। রান উঠে যথাক্রমে ১০৬ ও ৮৭।

প্রথম সেশনে বাংলাদেশের বোলারদের ভুগিয়েছিলেন হ্যারি টেক্টর, পিটার মুর ও লরকান টাকার। দ্বিতীয় সেশনে এ কাজটি করেন হ্যারি টেক্টর, লরকান টাকার ও অ্যান্ড ম্যাকব্রিন। তৃতীয় সেশনে ভোগান্তির শেষ কাজটি করেন লারকন, ম্যাকব্রিন, মার্ক অ্যাডায়ার ও গ্রায়াম হিউম।

সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের বোলারদের ভোগান্তির কাজ শুধুই বেড়েছে। শেষ সেশনে সেঞ্চুরি তুলে নেন লরকান। অভিষেক টেস্টে সেঞ্চুরি করতে তিনি বল খেলেন ১৪৯টি। নতুন বলে তাইজুলের ওভারে ২ রান নিয়ে তিনি এই মাইলফলক স্পর্শ করেন। ১ ছক্কার সঙ্গে ছিল ১৩টি চার। ২০১৭ সালে টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর আইরিশদের এটি ছিল দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। আগের সেঞ্চুরি (১১৮ রান) করেছিলেন কেভিন ও' ব্রেইন। পাকিস্তানের বিপক্ষে সেটি ছিল আবার তাদের অভিষেক টেস্টও।

সেঞ্চুরি করার পর আর বেশি সময় টিকতে পারেননি টাকার। নতুন বলের সুবিধা নেন এবাদত। কাভারে ক্যাচ ধরেন শরিফুল। শেষ হয় তার ১৬২ বলে ১ ছক্কা আর ১৪ চারে সাজানো ইনিংসের। ম্যাকব্রিনের সঙ্গে সপ্তম উইকেট জুটিতে যোগ করেন ২৮.৩ ওভারে ১১১ রান।

লরকান আউট হলেও বাংলাদেশের বোলারদের ভোগান্তি শেষ হয়নি। নতুন করে দেখা দেন ম্যাকব্রিন। মার্ক অ্যাডায়ার ও গ্রায়াম হিউমের সাপোর্ট পেয়ে নিজের ইনিংস বাড়িয়ে নেওয়ার কাজটি করে যান। যা বাড়াতে থাকে দলের রান। মার্ক ১৩ রান করলেও বল খেলেন ৪৯টি। তাকে ফেরান তাইজুল স্লিপে লিটন দাস ক্যাচ ধরলে। জুটিতে রান আসে ৩১। হিউম (২৩ বলে ৯ রানে অপরাজিত) এসে জুটি বাঁধার পর তৃতীয় দিন পার করে দেন ৮.৩ ওভার খেলে ২১ রান যোগ করে।

আয়ারল্যান্ডের হয়ে সবগুলো টেস্ট খেলা ম্যাকব্রিন ব্যাট হাতে আছেন সেঞ্চুরির পথে ১৪৮ বলে ১ ছক্কা ও ৮ চারে ৭১ রানে অপরাজিত। ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি করেন ৯৩ বলে ১ ছক্কা ও ৫ চারে।

তাইজুল ৮৬ রানে ৪টি, সাকিব ২৬ রানে ২টি এবং শরিফুল ৩৫ ও এবাদত ৩৬ রানে নেন ১টি করে উইকেট।