কবি, গদ্যকার ও সাহিত্য বিশারদ আবু হাসান শাহরিয়ারের জন্মদিন আজ
আবু মকসুদ
প্রিয় কবি, গদ্যকার ও সাহিত্য বিশারদ আবু হাসান শাহরিয়ারের জন্মদিন আজ। মন থেকেই চাই, শাহরিয়ার স্যার (যদিও তিনি 'স্যার' সম্বোধন পছন্দ করতেন না; 'ভাই' ডাকতে বলতেন।) আরও অনেক অনেক বছর বেঁচে থাকুক, সুস্থ থাকুক এবং কবি ও কবিতা নিয়ে আরও বই লিখুক। বৃক্ষ, নদী ও বইয়ের সাথে আরও আরও মিতালী হোক স্যারের।
বানান নিয়ে আমার সচেতনতা ও চর্চার পেছনে মানুষটির পরোক্ষ অবদান আমি বরাবরই স্বীকার করতে বাধ্য। তাঁর সাথে যোগাযোগ না-হলে, তিনি আমায় বকা না-দিলে, দিক-নির্দেশনা না-দিলে হয়তো এতটা সচেতন হতাম না 'বানান' বিষয়ে। কি কবিতার রূপাধারে, কি ভাষার শ্রীমূলে তিনি আমার পরোক্ষ শিক্ষক। কবি ও কবিতা নিয়ে তাঁর প্রজ্ঞা, জ্ঞান ও চিন্তাভাবনাকে আমি বরাবরই কুর্নিশ করি।
তাঁর সাথে যতবারই কথা বলেছি (একবার ব্যতিক্রম), তাঁর সৃষ্টিশীল ফেবু-পোস্ট পড়েছি ততবারই কিছু-না-কিছু শিখেছি, জেনেছি। তাঁর কবিতা-বিষয়ক গদ্যের বইগুলো আমার কাছে মহার্ঘ; বইগুলোর কাছে আমার অনেক ঋণও। যেকোনো কবিতা-প্রেমিকেরই উচিত তাঁর এ বইগুলো সংগ্রহ করে পড়া (এখন সব এক-মলাটেই পাওয়া যাচ্ছে)।
শাহরিয়ার স্যারের সাথে একসময় সুসম্পর্ক থাকলেও, এখন তাঁর সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নেই, হবেও না আর কখনও। তবে বরাবরই আমি তাঁর কবিতা ও গদ্যের ভক্ত।
কবিতার জগতে আবু হাসান শাহরিয়াররা কালে কালে জন্মান না। আমার সৌভাগ্য খুব কম সময়ের জন্যে হলেও আমি তাঁর মতো একজনের সহচর্য পেয়েছি।
শাহরিয়ার স্যারের এ কবিতাগুলো আমার বিশেষ প্রিয় :
উত্তরসাধক
যে আমাকে অস্বীকার করে
প্রথমত অকবি সে; দ্বিতীয়ত পরশ্রীকাতর
হয়তো সে মিডিয়াপালিত কোনও প্রাবন্ধিক; ভুলবাক্যে বুকরিভিউ করে
অথবা সে আসল কালপ্রিট, দ্যাখে বড় কাগজের লঘু সাহিত্য পাতাটি
নতুবা সে ছোট কোনও কাগজের পাতি সম্পাদক
নিজেকে জাহির করে নিজের কাগজে
কাগজে-কাগজে করে সখ্যবিনিময়
ওরা কেউ কবি নয়, ওদের পেছনে ঘুরে বহু প্রতিভাকে আমি নষ্ট হতে দেখি
যে-আমাকে কেবলই স্বীকার করে, বিতর্ক করে না
সে-ও কোনও কবি নয়, জেনো
যে আমাকে গ্রাহ্য করে, পাশাপাশি মধুর তর্কও
তারই মধ্যে আমি কিছু সম্ভাবনা দেখি
সে-ও কবি নয়
কে তাহলে?
অমিতসম্ভাব্য কবি ভালবাসে একার সন্ন্যাস
বালিকা আশ্রম (সর্গ : ০৬)