সংশয়

সংশয়

কবিঃ অসীম সাহা

--তোমরা বলো দ্রোহ, বলো প্রেমহীন বিশ্বাসঘাতকতা;
বলো বৃন্তচ্যুত পরাঙ্মুখ প্রেমের কাঙাল।
আমি নিঃশব্দে কান পেতে শুনি…কিছুই বলি না।

নদীর ওপারে জ্বলে ওঠা অগ্নির উত্তাপ
আমার গায়ে এসে লাগে
আমি ভীরু কাকাতুয়ার মতো কথা বলি অচেনা ভাষায়,
তবু সেই অগ্নির দহন থেকে কিছুতেই বাঁচতে পারি না।
আমি দগ্ধ কুঁড়েঘর থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করি।
চিৎকার করে বলি, “আমাকে বাঁচাও।”
পরিচিত চেনা মুখগুলো খিলখিলিয়ে হাসে। 

কে যেন কানের কাছে ফিস্-ফিস্ করে আমাকে
প্রশ্ন করে, “মাতৃভূমির প্রতি তোর এতো বিতৃষ্ণা কেন রে খোকা?”
আমি কোনো কথা বলি না।
আমার দু’চোখ থেকে ফোঁটা-ফোঁটা অশ্রু ঝরে পড়ে।
আমি প্রাণপণ শেকড়-বাকড়সুদ্ধ আমার অস্তিত্বের
সর্বশেষ আশ্রয়টুকু তুলে নিয়ে ফেলে দিতে চাই
   অন্য কোনো গহন নদীতে;
যেখান থেকে ভাসতে-ভাসতে হয় তো আমি একদিন পৌঁছে যাবো
ভস্মীভূত অজানা বন্দরে।

অথচ আমার এই দেহখানি যেন এক অনড় পাথর 
তাকে যতোই আমি দূরে সরিয়ে নিতে চাই 
সে-ততোই আঁকড়ে ধরে রাখতে চায় নিহিত শেকড়।
চোরকাঁটায় জড়িয়ে যায় পা, 
ভেতর থেকে জড়িয়ে ধরে সম্মোহনী লতা;
তাকে আমি কিছুতেই ছাড়াতে পারি না।
আমার পেছনে মৃত্যুকূপ
সম্মুখে অনতিক্রম্য তীক্ষ্ণ অন্ধকার;
আমি কোনদিকে যাবো?