কবিতার পটভূমি
মুহম্মদ বজলুশ শহীদ।
'ডোভার বিচ ' আটলান্টিক মহা সাগরের, ইংলিশ চ্যানেল সংলগ্ন একটা সৈকত। এটা ইংল্যান্ডের অংশে পড়েছে।
কবি তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে 'ডোভার বিচে' গিয়েছেন মধুচন্দ্রিমায়।
রাতের 'ডোভার বিচ' কবির মনের গভীরে এসে নান্দনিক প্রকৃতির সাথে ভিন্ন এক জীবন বোধে ধরা দিল। আসুন দেখি কবির ভাবনা গুলো।
ডোভার সৈকত -ম্যাথিউ আরলন্ড
(Dover Beach- Mathew Arlond)।
।প্রথম স্তবক।।
আজকে একটা স্নিগ্ধ রাতে,
এসেছি মধু চন্দ্রিমাতে,
জোৎস্না সায়রে উতাল সাগর
উপকূলব্যাপী ঝরণা আলোর
ওপারে ফরাসী তটরেখা,
দূরালোকে যায় আবছা দেখা৷
এপারেও , সেই আলোক ছটায়
পাহাড় চূড়ার ছায়ারা লুটায়,
আছে দাঁড়িয়ে মৌন মায়ায়,
জোস্নালোকে মোহের ছায়ার।
কী সুমিষ্ট বাতাস আসছে ভেসে!
এসো প্রিয়া বসো- বাতায়ন পাশে
চেয়ে দেখো বেনো চাঁদ হাসিছে
সাগর যেথায় মাটিতে মিশেছে।
নুড়ী পাথরের গান একটু শোন,
ঢেউ এর দোলায় তুলে অনুরণন,
তরঙ্গ আঘাত টানছে তাকে ,
আবার ছুড়ছে কিনারার দিকে।
আসা যাবার এই পথের মাঝে
চির বেদনার সুরটি বাজে।
চিরন্তন সেই কষ্টগীতি , এজিন সাগর তীরে
সফেক্লিসও শুনেছিল ঢেউয়ের দোলার ভিড়ে৷
সেই বেদনা আজকে যেন আসছে আবার ফিরে
শুনছি মোরা সেই সে গীতি
উত্তর সাগর তীরে।
মানবজীবন দুঃখে ভরা
আসা যাবার পথে,
নুড়ির মত যাচ্ছে ক্ষয়ে
নিদারুণ সংঘাতে।
ধর্মবোধ, নৈতিকতা,স্রষ্টায় বিশ্বাস,
এখন তারা যাচ্ছে ধ্বসে ,
বাড়ছে অবিশ্বাস!
মূল্যবোধের আলোক ফুলের ধরিত্রীর প্রান্তর,
ভালবাসার বেষ্টনী ছিল
মানুষের অন্তর।
আজকে দেখি লুপ্ত সেসব
কষ্ট নিরন্তর ।
যাচ্ছে ক্ষয়ে নৈতিকতা
নগ্নতার আসর।
এসো,মোরা - দোঁহে ভালবাসা দিয়ে
এমন জগৎ গড়ি,
স্বপ্ন দেখুক নতুন পৃথিবী
শান্তি থাকুক ভরি।
এমন সুন্দর, এমন সুখের,
এমন শান্তির আবাস,
দেখেনি পৃথিবী আর কোনকালে চেতনার বিশ্বাস।
এখন এখানে নেই আনন্দ, নেই ভলোবাসা- নেই কোন বিশ্বাস,
আঁধার এখানে ঘনিয়ে রয়েছে, তীব্র হাহাকার,বিষাক্ত নিশ্বাস।
কেউ নেই হেথা, তোমার ব্যাথায় সমব্যথী হতে চায়,
অবিশ্বাসের বিষবাষ্পে যুদ্ধে
সবাই জড়ায়।
ভুল ধারণার ঘুন্টি যখন
মনের মাঝে বাজে,
রাতের আঁধারে মূর্খের দল
রণ সজ্জায় সাজে।