খোকা থেকে জাতির জনক" (পুঁথিকাব্য

খোকা থেকে জাতির জনক" (পুঁথিকাব্য


------------আব্দুছ ছালাম চৌধুরী 

সতেরো মার্চ উনিশ'শো বিশে,জন্ম নিলো এক সন্তান,
মা ছিলেন সায়রা খাতুন,আর বাবা লুৎফর রহমান। 

সবাই মিলে নাম রাখিলো,ডাকবো খোকা বলে,
খোকা পেয়ে খুশি মা', ----------আঁখি ছলছলে। 

ধীরে ধীরে হলো বড়, গেলো পাঠশালায়,
শেখ মুজিব তার নাম রাখিলেন, লেখায় পড়ায়। 

লেখা পড়ায় যেমন ভালো,তেমনি গলার স্বর,
দুঃখির পাশে দাঁড়াতে লাগলো,রইলো না কেউ পর। 

আশেপাশে মাঠে ঘাটে,যেখানেই হয় অন্যায়,
প্রতিবাদের মুখোমুখিতে,শেখ মুজিবকেই পাওয়া যায়।

তেমনি এক ঘটনা ঘটলো,সুরেন ব্যানার্জির বাড়িতে,
সহপাঠী বন্ধু, আবদুল মালেককে মারপিট করাতে। 

প্রতিবাদী হলেন মুজিব,করলেন হাতাহাতি, 
পুলিশ এসে ধরে নিলো,আটকালো,সাত দিন,সাত-রাত্রি। 

সর্ব প্রথম গেলেন জেলে,সেই ছাত্র জীবনে,
মধ্যস্ততায় মামলা তুললো,তার অটুট নীতির কারণে। 

ধীরে ধীরে ছড়িয়ে গেলো,শেখ মুজিবের নাম,
আশেপাশের গ্রাম গঞ্জে,সবাই দিতো সালাম। 
//// 

মুসলিম ছাত্রলীগের নেতা হলেন, হলেন সভাপতি,
ভাষন দিতে,ধরলো পুলিশ,বুঝলো না মতিগতি। 

তারপর থেকে কি হলো ভাই, শোনো দিয়া মন,
একে একে সকল আন্দোলনে,করলেন নিজেকে সমর্পন। 

ইংরেজ থেকে মুক্ত হলো, ভারত পাকিস্তান, 
প্রথম সারির নেতা হয়ে,আনিলেন তুফান। 

আটচল্লিশ থেকে শুরু তাহার,জাতীয় রাজনীতি,
জেল-জুলুম নির্যাতনে, পায় না কোনো গতি। 

আটচল্লিশ থেকে বায়ান্ন,কেবল কারাগারে আসা যাওয়া,
মুক্তি দিয়েই ধরে নিতো,চলতো ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। 

কতদিন জেলে ছিলেন,তার হিসাব কে বা রাখে,
এরই মাঝের নির্বাচনে,আটকানো গেলো না মুজিব'কে। 

আইয়ুব খান সামরিক আইন,করলো এবার জারি,
শেখ মুজিবকে গ্রেপ্তার করতে,কতো'না ছলচাতুরী। 

ছয় দফা প্রস্তাব দিতে,ডাকলেন সমাবেশ,
আবার হলো জেল জুলুম,তা জানলো সারাদেশ। 

গণঅভ্যুত্থানে মুক্তি পান,সেই উনিশো উনসত্তরে,
হাজার দিনের বেশী সময়, কাটালেন কারাগারে। 

তারপর 
ছয় দফা দাবিতে ছিল,প্রাদেশিক স্বায়ত্ব-শাসন, 
যার কারণে আইয়ুব খান,দিলো সামরিক শাসন। 

যোগসাজশ আর ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনিলো
আসামি করে আগরতলা মামলায়,মুজিবকে ফাঁসালো। 

ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে,তা প্রত্যাহার করা হয়,
সত্তরের নির্বাচনে পেলো,আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ জয়। 

বিজয় পেয়ে সরকার গঠনে,সুযোগ দেয়নি তারা,
ইয়াহিয়া খানের রাজনীতিতে,মতানৈক্যের অনেক ধারা। 

সাতই মার্চ,উননিশো একাত্তর রেসকোর্স ময়দান,
দিক নির্দেশনা,কাব্য কবিতায়,আনিলেন তুফান। 

ভুট্টোর সাথে শেখ মুজিবের আলোচনা,বিফলে গেলো,
একাত্তরের ২৫শে মার্চ,তারা গণহত্যা চালালো। 

স্বাধীনতার চুড়ান্ত ঘোষণা সেই রাতেই লিখে যান,
একই রাতে গ্রেফতার করে, নিলো পশ্চিম পাকিস্তান। 

নয় মাসব্যাপী রক্তক্ষয়ী,মুক্তিযুদ্ধ হলো বাংলাদেশে,
অবশেষে আত্মসমর্পণ ১৬ ডিসেম্বরে এসে। 

জয় বাংলায় মুখরিত হলো, উড়লো নতুন পতাকা,
স্বাধীন হলো সোনার বাংলা,মুক্ত চোখে দেখা। 

নেতা তো ভাই অনেক ছিলো,তার মতো কেউ নয়,
দৃঢ়চেতা আর অটুট নীতিতে, আমরা পেলাম জয়। 

দশ জানুয়ারী উননিশো বাহাত্তরে,ফিরলেন বীরের বেসে,
মুজিব মুজিব স্লোগানে,মুখরিত হলো সারা দেশে। 

জেল জুলুম আর অত্যাচারে,নোয়ায়নি কখনো মাথা,
খোকা থেকে হলেন রাষ্ট্র নায়ক,হলেন জাতির পিতা। 

১৭/৩/২০২১ খ্রীস্টাব্দ/লন্ডন"