গার্ডার দুর্ঘটনা: গাফিলতি ছিল চায়নিজ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের

গার্ডার দুর্ঘটনা: গাফিলতি ছিল চায়নিজ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের

বাংলাভাষী ডেস্কঃঃ

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না গ্যাঝুবা গ্রুপ করপোরেশনের (সিজিজিসি) গাফিলতির কারণেই উত্তরায় বিআরটি প্রকল্পের গার্ডার পড়ে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। উত্তরা দুর্ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। কমিটির প্রতিবেদনে ১২টি কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে।

রবিবার (৪ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের কথা তুলে ধরেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী।

১৫ আগস্ট গার্ডার পড়ে পাঁচজনের মৃত্যুর পর সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নীলিমা আখতারকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির প্রাথমিক তদন্তেই ঠিকাদারের গাফিলতি পাওয়ার কথা জানিয়েছিল।

সচিব বলেন, ‘তদন্ত কার্যক্রমের সার্বিক পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ অন্তে দেখা যায় যে, ১৫ অগাস্ট তারিখে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ব্যত্যয়ের কারণে যে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে, তাতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিজিজিসি প্রধানত দায়ী।’

আমিন উল্লাহ নূরী বলেন, ‘তদন্ত কমিটি ১৬ আগস্ট প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। উক্ত প্রতিবেদনে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায় চিহ্নিত হয়। পরবর্তী সময়ে বিস্তারিত তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়।’

সচিব জানান, তদন্ত কমিটি গত বৃহস্পতিবার পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়। তাতে এই দুর্ঘটনার জন্য ১২টি কারণ চিহ্নিত করা হয়। এসব কারণের মধ্যে রয়েছে-পূর্বানুমতি ছাড়া জাতীয় শোক দিবসে সরকারি ছুটির দিনে কাজ করা হয়েছিল; প্রথমবারের মতো দিনের বেলায় গার্ডার স্থানান্তরের কাজ চলছিল; ক্রেনটি সহকারী অপারেটর/হেলপার চালাচ্ছিলেন, যার লাইসেন্স ছিল না; দুর্ঘটনার সময় ক্রেনের অবস্থান ছিল অসমতলে; ক্রেনটির ডিজিটাল মনিটর ছিল না; সুনির্দিষ্ট ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা ছিল না; ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট কর্মীদের যোগ্যতা ছিল না; সেইফটি ইঞ্জিনিয়ার যোগ্যতা না থাকা, ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান ছিল না এবং ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানে কর্মকর্তাদের নিয়োগের অনুমোদন না থাকা।

প্রসঙ্গত, গত ১৫ আগস্ট বিকালে ঢাকার উত্তরায় জসীম উদ্দীন সড়কে প্যারাডাইস টাওয়ারের সামনের ক্রেইন দিয়ে একটি গার্ডার তোলার সময় তা সেটি ছিটকে গিয়ে একটি প্রাইভেটকারের উপর পড়লে একই পরিবারের পাঁচজন ঘটনাস্থলেই নিহত হন। আহত হন আরও দুজন।

জানা গেছে, এই প্রকল্পে যথেষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা না করে কাজ করার অভিযোগ আগে থেকেই ছিল। প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের অভিযোগ, নিরাপত্তার অবহেলার বিষয়টি নিয়ে ঠিকাদারকে চিঠি দেওয়া হলেও তারা গা করেনি।