ঘূর্ণিঝড়ের মূল অংশ উপকূল অতিক্রম করবে দুপুরে

বাংলাভাষী ডেস্কঃঃ

অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্র উপকূল অতিক্রম করবে দুপুরে। এক্ষেত্র ১২ টা থেকে পরবর্তী তিনঘণ্টা চলবে ভয়াবহ তাণ্ডব।

তবে সেটি মিয়ানমারের দিকেই বেশি হবে।

আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান জানিয়েছেন, ঝড়ের কেন্দ্রে ব্যস ৭৫ কিলোমিটার। আর এটি যাচ্ছে সেন্টমার্টিনের দক্ষিণ দিয়ে রাখাইন রাজ্যে। যেহেতু কেন্দ্রের ব্যস ৭৫ কিলোমিটার, সেহেতু ঝড়ের কেন্দ্রের কিছু অংশ সেন্টমার্টিনের ওপর দিয়ে যাবে।

তিনি বলেন, সকাল আমরা সেখানে বাতাসের গতিবেগ ৪০ কিলোমিটার পেয়েছি। এটা বিকেল ৩টা দিকে হয়তো ১০০ কিলোমিটারের বেশি হয়ে যেতে পারে।

বর্তমানে অগ্রভাগ উপকূল অতিক্রম করছে। এটি কেন্দ্রে বাতাসের গতিবেগ ২১০ কিলোমিটার পর্যন্ত উঠে যাচ্ছে। কেন্দ্র উপকূল অতিক্রম করার সময় ব্যাপক প্রভাব পড়ে। তবে সে সময় ঝড়ের কেন্দ্রের গতি কমে ১৪৫ কিলোমিটারে নেমে আসবে।

আবহাওয়াবিদ মো. মনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, কক্সবাজার-উত্তর মায়ানমার উপকূল অতিক্রম শুরু করেছে। এটি আরো উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আজ বিকেল-সন্ধ্যা নাগাদ সিটুয়ের (মায়ানমার) নিকট দিয়ে কক্সবাজার-উত্তর মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করতে পারে।

অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কি.মি. এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৯৫ কি.মি., যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ২১৫ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুদ্ধ রয়েছে।

কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ১০ (দশ) নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা চট্টগ্রাম ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ০৮ (আট) নম্বর মহাবিপদ সংকেত এবং মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ০৪ (চার) নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

এদিকে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ১০ (দশ) নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ০৮ (আট) নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে যেতে বলা হয়েছে।

কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর ও বরগুনা
জেলার নদী বন্দরগুলোকে ০৪ (চার) নম্বর নৌ-মহাবিপদ সংকেত (পুন.) ০৪ (চার) নম্বর নৌ-মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

অন্যদিকে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ০৮-১২ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

ঝড়ের অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ০৫-০৭ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে চট্টগ্রাম, সিলেট ও বরিশাল বিভাগে ভারী (৪৪-৮৮ মিমি) থেকে অতি ভারী (৮৯ মিলিমিটারের বেশি) বর্ষণ হতে পারে। অতি ভারী বর্ষণের প্রভাবে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধ্বস হতে পারে।

এই অবস্থায় উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।