জীবনজলের নিধি

জীবনজলের নিধি
নাজনীন নাহার 
খুব বেশি প্রয়োজন থাকে কি প্রকৃতির পরিচয়ে পাওয়া জীবনে?
তোমরা তোমাদের ভাবনাকে করো অবরুদ্ধ, 
আমি আমার ভাবনাকে ভাসিয়ে করি মুক্ত।
আঁধারে পাওয়া জীবন আঁকড়ে বাঁচি,
শান্ত মধুর মুক্ত জীবন যাচি।
আমার অনেককে অনেক কিছু দেবার আছে,
জগতে অনেক কিছু ভালোবাসার আছে,
নিজেকে ত্যাগ করে অন্যের জন্য ভাবার আছে,
আর তা থেকে যে আনন্দ রস নিঃসৃত হবে সেই রসের সুধা উপজীব্য করার সাধনা আছে।
আমি তাবৎ হৃদয়ের অনর্গল ইচ্ছার ঔরসে সঞ্চারিত করতে চাই সেই অন্ন, শক্তি, অর্থ।
আমার এই দীর্ঘ জীবনে, জীবনকে যদি সরস মধুর না করি, ঈশ্বর প্রদত্ত জীবনকে তৃপ্তময় করে তোলার ইচ্ছাকে যদি মৃত উজ্জীবনে রাখি,
তবে বেঁচে থাকার মানে কিসে পাবো?
জানি উগ্র প্রকৃতির, জ্ঞানীর ভাবপ্রবণতা নিয়ে চলা,
তবু যে সমস্ত আনন্দ নিরর্থক হয়ে যাবে জীবন থেকে দুর্ব্যবহার আর ধৃষ্টতা পেলে!
নিজের রুচি দিয়ে যে জীবন আমি সাজিয়েছি,
তোমাদের কলুষিত কলহ প্রিয় সভ্যতা মেনে ভবিষ্যত জীবনে তাকে কণ্টকাকীর্ণ পথে ঠেলে দিতে পারবো না।
যদি পারো তো ক্ষমা করো আমায়!
কারণ, তোমাদের মতো করে শ্বাসরুদ্ধ অনুভূতি ধারণে আমি অপারগ।
যে জীবন মানুষের অথচ মাংসের ক্ষুধার লাভায় রুচি ও সভ্যতা বিদ্যমান সেখানে আমি প্রণয়ের অভাব দেখি!
আর যে জীবন মনুষ্যত্বের সেখানে আত্মার উজান ঢেউ অভিলাষী হয়ে উতরে পরে, প্রণয়ী বাতাসে জ্ঞান, প্রেম, পূর্ণ মানব হৃদয় ভেসে চলে অনন্ত জয়ের টানে।
আর আমি; আমি সেই মানবতার প্রেমের অভিসারী!
আমার জীবনের সংকল্প তরঙ্গ দ্বীপে বিলাপ করে 
মানবতার তরে মুচড়ে পরে আমার জীবন জলের নিধি।