'টেকসই উন্নয়নের অঙ্গীকারের মূলে রয়েছে শিক্ষা'

বাংলাভাষী ডেস্কঃঃ

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, ২০৩০ সালে টেকসই উন্নয়নের অঙ্গীকার রয়েছে। সেখানে যে ১৭ টি লক্ষ্য রয়েছে, যদি আমরা সব কিছুর বিবেচনায় আনি সব কিছুর মূলে রয়েছে শিক্ষা।

তিনি বলেন, আমরা নতুনভাবে শিক্ষা ক্ষেত্রে যেভাবে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। আমরা একটি সময়োপযোগী শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করেছি। শিক্ষাতে যদি আমরা মান অর্জন করতে পারি, সেই শিক্ষা জীবনব্যাপী শিক্ষা করতে পারি এবং সেই শিক্ষা যদি সাম্যের শিক্ষা হয় ও অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা হয় তাহলে বাকি টেকসই উন্নয়নের ১৬টি লক্ষ্য অর্জন করা অনেক সহজ হয়ে যাবে।

১৪ জানুয়ারি (শনিবার) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ দৃশ্যমান, লক্ষণ এবার স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ' প্রতিপাদ্যকে উপজীব্য করে ছাত্রলীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

নতুন শিক্ষাক্রম সম্পর্কে দীপু মনি বলেন, একটা নতুন শিক্ষাক্রমে যেতে হলে অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হয় আমরা এখনো সেই স্টেজেই আছি। ২০২৩, ২০২৪ ও ২০২৫ এ তিন বছর মিলিয়ে এ শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন হবে। এ বছর বইগুলো পরীক্ষামূলক গেছে। গত বছর আমরা ৬২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাইলট করেছি, সেই প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবক সবার কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া অসাধারণ পেয়েছি।

তিনি আরও বলেন, এ বছর মাধ্যমিকে ৩৩ হাজার প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষামূলক সংস্করণ হিসেবে বইগুলো দিয়েছি। আমরা শিক্ষার্থী-অভিভাবক-শিক্ষক শিক্ষাবিদদের কাছে ফিডব্যাক নেব এবং বইগুলো পরিমার্জন ও পরিশীলন করা হবে। এবার ষষ্ঠ ও প্রথম শ্রেণিতে যে বইগুলো গিয়েছে এ নিয়ে কারো অস্বস্তি-আপত্তি থাকতেই পারে। তাই আমাদের এ বিষয়গুলো জানাবেন, আমরা সেগুলো যাচাই-বাছাই করে আগামী বছর জন্য সংশোধন করব এবং বাকি শ্রেণির বইগুলো সেই আলোকে তৈরি করা হবে।

চতুর্থ শিল্প বিপ্লব প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা বিগত তিনটি শিল্প বিপ্লবের অংশীদার হতে পারিনি। তবে এখন আমাদের সুযোগ আছে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের অংশীদার হয় এবং সফলতা লাভ করা। এসব বিবেচনায় ২১ শতকের সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় উপযুক্ত শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করতে হবে। মুখস্ত, সনদ, পরীক্ষানির্ভর ভীতি যে শিক্ষা ব্যবস্থা ছিল তা থেকে বেরিয়ে এসে জ্ঞানের পাশাপাশি দক্ষতা অর্জনের শিক্ষার পাশাপাশি সফট স্কিলগুলো শিক্ষাব্যবস্থায় আনতে হবে।

দীপু মনি বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন আমাদের যে শিক্ষাব্যবস্থা সেটি উপনিবেশিক শিক্ষাব্যবস্থা। সেটি শুধু কেরানি পয়দা করার শিক্ষাব্যবস্থা। দেশটিকে এগিয়ে নিয়ে সোনার বাংলাদেশ গড়তে এ শিক্ষাব্যবস্থা দিয়ে সেটি সম্ভব ছিল না। তাই তিনি প্রখ্যাত বিজ্ঞানী ডাক্তার কুদরত-ই খুদাকে প্রধান করে একটি শিক্ষা কমিশন গঠন করেছিলেন। কুদরত-ই খুদার দিক নির্দেশনায় স্বাধীন বাংলাদেশে যে প্রথম শিক্ষা কমিশন গঠন হয়েছিল, সেটি যদি বাস্তবায়িত হতো আজকেরে বাংলাদেশ দেখছি, এ বাংলাদেশ অনেক আগেই পেতে পারতাম। বরং আরও এগিয়ে থাকা একটি বাংলাদেশ আমরা পেতে পারতাম।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে অন্যান্য খাতের মতো শিক্ষা খাতকেও পিছিয়ে দেওয়া হয়। আবার সবকিছুতে পাকিস্তানি ভাবধারা নিয়ে আসা হয়। স্বাধীনতার ৫০ বছরের মধ্যে প্রায় ৩০ বছর উল্টো পথে হেঁটেছি। এখন আমাদের সময় খুব দ্রুত এগিয়ে যাওয়ার। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এভাবেই দেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ড. মাহফুজুল ইসলাম।