পাকিস্তানিরা বাংলার উপর বারবার আঘাত হেনেছে: প্রধানমন্ত্রী

বাংলাভাষী ডেস্কঃঃ

পাকিস্তানিরা বারবার বাংলার উপর আঘাত হেনেছে এবং পৃথিবীর কোনো দেশে এতবার সংস্কৃতির উপর আঘাত আসেনি বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘১৯৪৭ সালে পাকিস্তান নামে একটি দেশের সৃষ্টি হয়, যারা পূর্ব পাকিস্তান তথা বাংলাদেশ থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন ছিল। একসময় তারা আমাদের সংস্কৃতিতে আঘাত হানে।’

সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত ‘একুশে পদক ২০২৩’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘একসময় তারা আমাদের সংস্কৃতিতে আঘাত হানে। আমাদের ওপর উর্দু ভাষা চাপিয়ে দেয়। করাচিতে এক আলোচনায় তারা এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়। তাদের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আমাদের দেশে প্রবল আন্দোলন শুরু হয়।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলনের পর ১৯৫৩ সালে প্রথম ভাষা শহীদ দিবস পালন করা হয়। আরমানিটোলায় এক সভায় এ দিবস পালনের দাবি তোলা হয়।

এরপর ১৯৫৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে উর্দুর পাশাপাশি বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা করে। এরপরেও পাকিস্তানিরা থেমে থাকেনি। তারা তখন উর্দু হরফে বাংলা লেখার নিয়ম করে, আরবি হরফে বাংলা লেখার নিয়ম করে। রবীন্দ্রনাথের গান নিষিদ্ধ করে। যার প্রতিবাদে ছাত্রসহ সবাই রাজপথে নেমে আসে, যোগ করেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নেতৃত্বেই আমরা ভাষা আন্দোলনে, মুক্তিযুদ্ধে জয়লাভ করেছি। ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, আমাদের এ আন্দোলন ছিল সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক অধিকার আদায়ের আন্দোলন।’

তিনি বলেন, ‘একটা সময় আমাদের দেশে জয় বাংলা স্লোগান নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। এমনকি শেখ মুজিবের নাম মুছে ফেলা হয়েছিল। সে সময় অনেকে বলেছেন, শেখ মুজিব তো আন্দোলন করেননি, জেলে ছিলেন। কিন্তু তিনি তো ভাষা আন্দোলনের জন্যই কারাবরণ করেছেন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের পর বঙ্গবন্ধু সাড়ে তিন বছর ক্ষমতায় ছিলেন। এই সাড়ে তিন বছরের মধ্যেই তিনি সবার স্বীকৃতি পেয়েছিলেন। ’৭৫-এ বঙ্গবন্ধুকে নির্মম হত্যার ২১ বছর পর আমরা ক্ষমতায় আসি।’

এক দফার পর পরবর্তীতে তিন দফায় ক্ষমতায় থাকায় বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশ। আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য ২০৪২ সালের মধ্যে উন্নত দেশ গড়ে তোলা। আমরা বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে বাঁচতে চাই, যোগ করেন তিনি।

যারা একুশে পদক পেয়েছেন সবাইকে আমার অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এমন আরও অনেকেই আছেন, যাদের নাম আমরা জানি না। তাদের অবদানকে আমরা গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করি। আমাদের নতুন প্রজন্ম যেন তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে এগিয়ে যায়।’

এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজ নিজ ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য ১৯ জন বিশিষ্ট নাগরিক ও দু‘টি প্রতিষ্ঠানকে ‘একুশে পদক-২০২৩’ প্রদান করেন।

বাসস