বন্দিনী (ছোট গল্প)

বন্দিনী (ছোট গল্প)

     শাহারা খান

      সবুর সাহেবের টানা পোড়েনের সংসার।পরপর তিনটি মেয়ে।স্ত্রী রাহেলা বেগম ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে শয্যাসায়ী।বড় মেয়ে মলি সবেমাত্র ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা দিয়েছে।দেখতে বেশ সুন্দরী।ঘটক মারফত লন্ডনী পাত্রের বিয়ের আলাপ আসতেই সবুর সাহেব রাজি হয়ে গেলেন।পাত্রপক্ষের তাগাদা।যৌতুক বিহীন অল্প খরচে বিয়া।সবুর সাহেব ভাবলেন এইরকম সুযোগ হাতছাড়া করা অনুচিত।মেয়েটা বিদেশ চলে গেলে সুখে থাকবে।মলির খুব ইচ্ছে ছিলো,লেখাপড়া করে চাকুরি করবে।মায়ের চিকিৎসা করবে।সংসারের হাল ধরবে।বাবাকে বিশ্রাম দিবে।বাবা বললেন মারে,আমাদের চিন্তা তোর করা লাগবে না।তুই সুখে থাকলেই হবে।

           বিয়ের এক বছরের মধ্যে মলি লন্ডন চলে এলো।গ্রামে বড় হয়ে উঠা মলি বিদেশে এসে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে সময় লাগবে স্বাভাবিক।শশুর পক্ষের উচিত তাকে সহযোগিতা করা।কিন্তু ক’দিন যেতে না যেতেই স্বামী সজীবের কাছ থেকে শুনতে হয়,আনস্মার্ট কিছুই জানোনা।তোমাকে বিয়ে করে ভুল করেছি।যৌথ পরিবারে অনেক সদস্য।সবাই অফিস আদালত বাহিরের কাজ নিয়ে ব্যস্হ।সংসারের সব ঝামেলা মলির উপর।সবার রান্নার ব্যবস্হা করা।কাপড় ওয়াস,ইস্ত্রী,ঘর গোছানো।একটু ভুল হলেই শুনতে হয় শাশুড়ীর কটুক্তি।দেশে মা বাবার সাথে টেলিফোনে কথা বলার প্রাইভেসি নাই।

          প্রবাস নামক কারাগারে মলি বন্দিনী।নেই কোন স্বাধীনতা।নেই আপনজনের সাথে প্রাণ খুলে কথা বলার সুযোগ।নেই বাবা মায়ের স্নেহের পরশ।নেই বোনদের সাথে খুনসুটি।