মা’এর আবাস এখন গোয়ালঘরে

 মা’এর আবাস এখন গোয়ালঘরে


-সাঈফ ফাতেউর রহমান

মা'এর কাশির শব্দে ঘুমের ব্যাঘাত হয় বৌমা রমিসা’র 
পাশের ঘরে হুপিং কাশিতে সারারাত কাশতে থাকে মা 
একটু আরামের ঘুমানোর কোন উপায়ই তো নেই!
মায়ের স্থান হলো বারান্দায়।

কার্তিকের শীত
তীব্র হু হু বাতাস সারারাত
মায়ের কাশির দমক পাশের বাড়ির লোকদের কানে যায়
মুখে কাপড় গুজে আপ্রাণ চেষ্টা করতে থাকেন মা, 
বিরক্তিকর শব্দে খোকা, বৌমা, নাতির ঘুম ভাঙ্গে যদি!
নির্ঘুম মা অপরাধবোধে ভুগতে থাকেন
খোকা তার ঘুমের ব্যাঘাত একেবারেই সইতে পারেনা
বৌমার অভিযোগে খোকা আরও ত্যক্ত বিরক্ত হতে থাকে।

অসহায় মায়ের কোথাও যাওয়ার স্থান নেই।
খোকার বাবা যদি তাকে তাড়াতাড়ি ডেকে নিতো!
ডাক আসেনা, মা রাতভর দিনভর কাশতে থাকেন
খোকা-বৌমার বিরক্তির পারদ উপরে উঠতেই থাকে।

“এভাবে তো চলতে পারেনা, মা! না ঘুমাইয়া থাকা যায়!”
“ আমি তো না ঘুমাইয়াই কাটাচ্ছি বাবা, বছর বছর!
কী করলি ভালো হয় বাপ! ক, আমি তা-ই করবো”। 
গোয়াল ঘরটা উঠোনের ওপারে, ঘরটা বড়োই;
কিছুটা জায়গা শূন্যই থাকে; খোকার নিস্পৃহ কণ্ঠস্বর,
“ মা, তুমি অহন থাইক্যা গোয়াল ঘরেই থাইক্যো; পাটি দিয়া
দিবো, কোন্ন অসসুবিধা অইবোনা, দেইখ্যো!”

“ আইচ্ছা বাজান” মা’র কোন ভাবান্তর নেই।
বৌমার প্রশান্তি; কেবল নাতিটা ডুকরে কেঁদে ওঠে-
“বাজান-মা, বুড়া অইলে তোমাগোও গোয়াল গরে
রাহুম আমি, কসম কাটলাম!”


লালমাটিয়া, ঢাকাঃ অক্টোবর ১৩, ২০২১