যুক্তরাষ্ট্রে তুষারঝড়ে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে

বাংলাভাষী ডেস্কঃঃ

যুক্তরাষ্ট্রে শীতকালীন ঝড় ও তুষারপাতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৬ জন। ভারমন্ট, মিসৌরি, ওহাইও, উইসকনসিন, কানসাস, কলোরাডো অঙ্গরাজ্যে এসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে শুধু নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্যেই মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮ জনে। নিহতরা অধিকাংশই বাফেলো শহরের বাসিন্দা।

মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি ও মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

বিবিসি জানায়, দক্ষিণ ফ্লোরিডায় তাপমাত্রা অত্যন্ত কমে গেছে। মন্টানা অঙ্গরাজ্যে তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে এসেছে।

নিউ ইয়র্কের কর্মকর্তারা জানান, বাফেলোতে বেশ কিছু সংখ্যক লোক দুই দিন ধরে গাড়ির মধ্যে আটকে পড়েছিল। প্রচণ্ড ঝড়ের মধ্যে সেখানেই তাদের মৃত্যু হয়।

আবহাওয়াবিদরা সতর্ক করে জানিয়েছেন, নিউ ইয়র্কের অধিকাংশ স্থানে ৯ ইঞ্চির বেশি পুরু হয়ে তুষার পড়তে পারে মঙ্গলবার।

এইরি কাউন্টির নির্বাহী মার্ক পোলোনকার্জ বলেন, ‘আমরা টানেলের শেষ প্রান্তে আলো দেখতে পাচ্ছি, তবে এটি শেষ নয়। এটি ইতিহাসের সবচেয়ে বিপর্যকর ঝড়। এখন পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করা যায়নি।’

স্থানীয় গণমাধ্যমকে মার্ক বলেন, অধিকাংশ ভুক্তভোগী তুষারপাতের সময় হৃদযন্ত্রের সমস্যায় মৃত্যুবরণ করেছেন। তাদের অনেকের মরদেহ গাড়ির মধ্যে থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

নিউ ইয়র্কের গভর্নর ও বাফেলোর বাসিন্দা ক্যাথি হোচুল বলেন, এটা অনেকটা যুদ্ধে যাওয়ার মতো অবস্থা। রাস্তার পাশে গাড়িগুলোর অবস্থা খুবই শোচনীয়। তিনি আরও বলেন, জরুরি প্রয়োজনীয় ব্যবহৃত অনেক গাড়ি সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছে এবং বরফের মধ্যে আটকে গেছে।

গত রবিবার দুই থেকে ছয় বছরের শিশুদের নিয়ে উদ্ধারের জন্য ১১ ঘণ্টা অপেক্ষা করেছে একটি পরিবার। ওই পরিবারের জিলা সান্তিয়াগো বলেন, আমরা হতাশ হয়ে গিয়েছিলাম। তিনি জানান, গাড়ির ইঞ্জিন সচল রেখে উষ্ণতার ব্যবস্থা করেছিলেন এবং সমুদ্র থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করেছিলেন। একই সঙ্গে তিনি শিশুদের সঙ্গে খেলাধুলা করছিলেন, যাতে গরম থাকা যায়।

নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্যে ফেডালের সহযোগিতার অনুমোদন দিয়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি এক টুইটবার্তায় বলেন, ‘এই সপ্তাহে যারা তাদের প্রিয়জনদের হারিয়েছেন আমি তাদের সঙ্গে রয়েছি।’

আবহাওয়াবিদরা জানান, এ অবস্থা স্বাভাবিক করতে আরও কিছুদিন লাগবে। একইসঙ্গে অতি জরুরি না হলে ভ্রমণ করতে নিষেধ করেছেন। সপ্তাহজুড়ে প্রায় আড়াই লাখ বসতবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিদ্যুৎহীন অবস্থায় রয়েছে। যদিও বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ শুরু করা হয়েছে।