সাইক্লোন সিত্রাং আঘাত হানছে বাংলাদেশেই

সাইক্লোন সিত্রাং আঘাত হানছে বাংলাদেশেই

বাংলাভাষী ডেস্ক :

আবহাওয়া বিভাগ বলছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট একটি ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব এরই মধ্যে পড়তে শুরু করেছে বাংলাদেশে। সিত্রাং নামের এই ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র মঙ্গলবার ভোরবেলা বাংলাদেশের খেপুপাড়া অঞ্চল দিয়ে বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করছে বলে জানাচ্ছেন কর্মকর্তারা।

আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান বিবিসিকে বলেন, এটি যে বাংলাদেশ দিয়েই অতিক্রম করবে এটা নিশ্চিত, কারণ এরই মধ্যে ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রভাগ বাংলাদেশর উপকূলে চলে এসেছে।

তবে এটি 'সুপার সাইক্লোন' হওয়ার কোন আশঙ্কা নেই বলে উল্লেখ করেন তিনি।

বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এনামুর রহমান রবিবার বলেছিলেন, এটি 'সুপার সাইক্লোন' হতে পারে।

কিন্তু আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান বলেন, সিত্রাং এখন একটি 'সাইক্লোনিক স্টর্ম' অবস্থায় আছে, মঙ্গলবার ভোরবেলা নাগাদ এটি 'সিভিয়ার সাইক্লোন' বা তীব্র ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে।

এরইমধ্যে বাংলাদেশের মংলা ও পায়রা বন্দরে সিগন্যাল বাড়িয়ে ৭ নম্বর করা হয়েছে।

আর চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে চলছে ছয় নম্বর সিগন্যাল।

বঙ্গোপসাগরের একটি নিম্নচাপ রবিবার সন্ধ্যে নাগাদ ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হয়।

আগেই ঠিক করে রাখা একটি তালিকা অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড়টির নাম হয় সিত্রাং।

মি. রহমান বলেন " ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটার এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকার সাগর এখন উত্তাল রয়েছে"।

ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ৪০-৫০ কিলোমিটার বেগে দমকা এবং ঝড়ো বাতাস বয়ে যেতে পারে, সেই সাথে ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টি হতে পারে।

মি. রহমান বলেন "ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ, অমাবশ্যা তিথি ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫-৭ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে"।

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলাগুলো উঁচু জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে অতিসত্বর নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

এদিকে দুর্যোগ এনামুর রহমান রবিবার বলেছিলেন, ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশে আঘাত হানলে দেশের উপকূলের ৭৩০ কিলোমিটার এলাকায় এর প্রভাব থাকবে।

কক্সবাজার থেকে সাতক্ষীরার শ্যামনগর পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকায় এর প্রভাব পড়তে পারে।