সজ্জন

সজ্জন

আব্দুছ ছালাম চৌধুরী 

নিয়তি আমারে গড়িয়াছে আগুন পানি আর মাটি দিয়ে,,,, মেঘকে করেছে বিবর্ণ,,, রংহীন হয়ে ঝরে। 

নিগূঢ় সাহিত্য চর্চা এবং কবিদের শব্দ প্রেমে তৃপ্তির ঢেঁকুর উঠলেই অনুসন্ধানের স্বার্থকতা ফুটে উঠে। তার অভিব্যক্তি সাহিত্যকে প্রশংসিত করে। প্রকৃতপক্ষে একজন সাহিত্য ও সংস্কৃতি মনা মানুষ, সাহিত্য ছাড়া থাকতে পারে না। প্রতিদিন তার সাহিত্যের আড্ডায় আনাগোনা করতেই হয়, সাহিত্যকে আত্মার আত্মীয় ভেবে মনেপ্রাণে লালন করে বলেই তা সম্ভব হয়।

-------------আমার দেখা একজন গুণী সাহিত্য প্রেমী মানুষের কথা লিখতে গেলে চোখে ভাসে সজ্জন এক কবির কথা, যিনি অনেকগুলো সাহিত্য সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত। যাকে নিয়ে আজকের আলোচনা করার দুঃসাহস করলাম। ত্রুটি বিচ্যুতি তো থাকবেই, তবুও চেষ্টা করবো তার সম্মন্ধে কিছু লিখতে। যিনি অত্যন্ত ভাবুক তথা ভাবগাম্ভীর্য অধিকারী। তার কবিতা প্রেম তার সাংগঠনিক তৎপরতা এবং হাস্যজ্জল বিনয়ী আচরণ, নির্দ্বিধায় বলতে পারি আমি সহ অনেককেই মুগ্ধ করেছে। যিনি বরাবরই নিউক্যাসেলের পক্ষ থেকে সবাইকে সবসময়ই লাল সালাম জানিয়ে থাকেন—

তিনি আর কেউ নন;

-----কবি লুৎফুর রহমান চৌধুরী রাকিব। 

সাধারণত তার টাইম লাইনের দিকে তাকালে দেখা যায়, তার সবকটি লেখা বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। 

তার বেশ কটি লেখা আমার পড়ার সৌভাগ্য হয়েছে,,,তার মধ্যে মা'কে নিয়ে লেখাটি সবচাইতে আবেগের।

তেমন একটি লেখা নিয়ে আজকে একটু আলোচনা করবো।

—মা—

মাগো, তুমি আজ কোথায়, মা 

আমি খুজে বেড়াই তোমায়, 

একটি বার দেখা দাও আমায় ।

মা,

এখানে অনেক কষ্ট হয় আমার 

প্রতি মূহুর্ত যেনো দম বন্ধ হয়ে আসে !

মাগো যেখানে প্রতিনিয়ত শুধু স্বার্থের খেলা

স্বজন প্রীতির আড়ালে স্বার্থ ছাড়া কেউ কিছু বুঝে না,

সেখানে একমাত্র নিঃস্বার্থ মহামানবী তুমি মা।

আমি কখনো বৃষ্টিতে ভিজে যাই

কখন যে রৌদ্রে শুকাই ,

আমি কিছুই বলতে পারি না মা--

শুধু চেনতায় অচেতনতায় তোমাকে মনে পড়ে 

বারে বারে মনে পড়ে মা----।

মাগো তুমি ছাড়া পৃথিবীটা

আমার কাছে নিশ্চুপ অন্ধকারে ঘেরা

তুমি নেই বলে অগাত যন্ত্রণা 

চুপ করে আমাকে সইতে হয় মা,

তুমি ছাড়া কেউ যে মা,, মমতার আচঁল বিছিয়ে দেয় না। 

মাগো, আমি ক্লান্ত হয়ে কখন কোথায় যে 

চোখ বুজে তোমাতে বিলিয়মান হয়ে যাই 

কিছু ই বলতে পারিনা,,,,,,,

বলতে পারিনা হৃদয়েপৃষ্টে জমে থাকা প্রতিটি কষ্টের কলি 

এভাবে চাপা পড়ে যায় হাজারো বাক্যের-ধ্বনি।

মহীতে কেউ তোমার মতো আদর করে না 

কূল জড়িয়ে কেউ ঘুম পাড়ায় না মা 

আমি ছায়াহীন,চ্ছন্নছাড়া শিখর

যেন এক জড়ার্জীণ মৃত বৃক্ষের মতো।

মাগো আমি তোমায় চিৎকার করে ডাকি

তুমি কি? শুনতে পাও--'

শুনতে পাও আমার আর্তনাদ

নীলাদ্রি বিশালতা বাতাসে ভারী হয়ে উঠে

প্রতিটি মুহুর্ত জুড়ে আমার আর্তস্বরে 

শুধু মা বাক্যের ধ্বনিতে -----

তবুও কি? তোমার কাছে,, 

একটি বারের জন্য, মাগো

আমার করুন আর্তনাদ পৌছে না মা।

মায়ের প্রতি এমন আকুতি খুব কম লেখাতে পাওয়া যায়। তার মায়ের প্রতি তার গভীর ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা দেখে আমি সহ অনেকেই আপ্লূত হয়েছেন। আমার সৌভাগ্য তার সাথে বেশ কয়েকটি লাইভে অংশগ্রহণ করেছি। সেই লাইভ গুলোতে তিনি তার "মা" কবিতাটা আবৃত্তি করেছেন। 

যদিও একান্ত এটি তার মায়ের প্রতি আবেগ, তথাপি তিনি সামাজিক একটা বার্তা দিয়ে রেখেছেন, মা'কে অবহেলা অবজ্ঞা করা যাবে না। সেই বার্তার সহমর্মিতা উপলব্ধি করে আমি বলি —

"মায়ের কাছে জান্নাত আমার

মায়ের কাছে সুখ, 

জয় করলে মায়ের মন 

মিটে যায় সব দুখ"

"ক্ষুধা দারিদ্র্য বঞ্চনা—যতই আসুক চারিপাশে, 

মায়ের পদ তলে সন্তানের বেহেশত,মা'কে যাও ভালোবেসে"

আমাদের এই সমাজ ব্যবস্থায় অনেক মা আশ্রয় কেন্দ্রে ও ঠাঁই পায় না, এতিমখানা তথা বৃদ্ধাশ্রমে থাকেন।

--- কবি লুৎফুর রহমান চৌধুরী মায়ের প্রতি এতো ভালোবাসা দেখিয়েছেন যে সেইসব হতভাগা সন্তানদেরকে মা'কে বৃদ্ধাশ্রমে রাখতে নিরুৎসাহিত করেছেন।

সাহিত্যের প্রতি আনুগত্যের সাথে সাথে সমাজ এবং সাংস্কৃতিক কর্মী হয়ে জীবন গড়তে উদ্বুদ্ধ করেছেন। 

কবি লুৎফর রহমান চৌধুরী রাকিবের সুন্দর ভবিষ্যত কামনা করি।