সিলেট নগরীতে সুরমার পানি বিপদসীমার উপরে, দুর্ভোগ চরমে

সিলেট নগরীতে সুরমার পানি বিপদসীমার উপরে, দুর্ভোগ চরমে

বাংলাভাষী ডেস্কঃঃ

বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢল চলমান থাকায় সিলেটে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। নগরীর ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া সুরমা নদীর পানি এরই মধ্যে বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। নদীর পানি উপচে গতকাল সোমবার থেকেই তলিয়ে যেতে শুরু করেছে নগরের বিভিন্ন এলাকা।

আজ মঙ্গলবার প্লাবিত এলাকার পানি আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। নগরের উপশহর, তেররতন, মেন্দিবাগ, ছড়ার পাড়, সোবহানিঘাট, মাছিমপুর, তালতলা, কালীঘাট, কাজিরবাজার, শেখঘাট, লালাদীঘির পাড়, জামতলাসহ বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে নগরীর বন্যা পরিস্থিতি।

সিলেট পয়েন্টে সুরমার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। আজ সকাল ৬টায় ছিল ১০ দশমিক ৯৪ সেন্টিমিটার, সকাল ৯টায় ছিল ১১ দশমিক ০৯ সেন্টিমিটার, দুপুর ১২টায় ছিল ১১ দশমিক ১২ সেন্টিমিটার, বেলা ৩টায় ছিল ১১ দশমিক ২১ সেন্টিমিটার। এই পয়েন্টে পানির বিপৎসীমার মাত্রা ১০ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার।

আজ মঙ্গলবার নগরীর বন্যাকবলিত বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সুরমার উপচে পড়া পানি সড়ক, দোকানপাট ও বাসাবাড়িতে প্রবেশ করেছে। গতকাল সোমবারে যেখানে হাঁটুপানি ছিল সেখানে আজ মঙ্গলবার কোমরপানি হয়ে গেছে। পানিতে সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে যান চলাচলও। এসব এলাকার বাসিন্দাসহ এই প্লাবিত সড়কগুলো ব্যবহারকারীরা নানা দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। নগরীর অভিজাত এলাকা উপশহরের প্রধান সড়কে হাঁটুর ওপরে পানি। পানি ঢুকেছে উপশহরসহ আশপাশের এলাকার বাসাবাড়িতেও।

নগরীর মাছুদিঘীর পাড় এলাকার বাসিন্দা অনিল পাল বলেন, ‘বাসার সামনে জলে ছল ছল করছে। বাসার দোতলায় হওয়াতে রক্ষা পাইছি। কিন্তু ঘর থেকে বের হলেই হাঁটুপানি। এই হাঁটুপানি মাড়িয়ে মেয়েকে নিয়ে স্কুলে গিয়েছি। প্রতিনিয়ত পানি বাড়তেছে। সকালের চেয়ে বিকেলে অনেক পানি বাড়ছে। এত দ্রুত পানি বাড়তে আগে দেখিনি।’

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, গতকাল সোমবার সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে সকাল ৬টায় ছিল ১৪ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার, সকাল ৯টায় ছিল ১৪ দশমিক ১৮ সেন্টিমিটার, দুপুর ১২টায় ছিল ১৪ দশমিক ২৪ সেন্টিমিটার, বেলা ৩টায় ছিল ১৪ দশমিক ১৭ সেন্টিমিটার। এই পয়েন্টে পানির বিপৎসীমার মাত্রা ১২ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার।

এদিকে কুশিয়ারা নদীর পানি আমলশিদ পয়েন্টে বিপদসীমা অতিক্রম করেছে সোমবার। আজ মঙ্গলবার সকাল ৬টায় ছিল ১৬ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার, সকাল ৯টায় ছিল ১৬ দশমিক ৭৮, দুপুর ১২টায় ছিল ১৬ দশমিক ৮৮ সেন্টিমিটার। এই পয়েন্টে পানির বিপৎসীমার মাত্রা ১৫ দশমিক ৪০ সেন্টিমিটার। কুশিয়ারা নদীর পানি শেওলা পয়েন্টে সোমবার বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৬টায় ছিল ১৩ দশমিক ৪৬ সেন্টিমিটার, সকাল ৯টায় ছিল ১৩ দশমিক ৫০, দুপুর ১২টায় ছিল ১৩ দশমিক ৫১ সেন্টিমিটার, বেলা ৩টায় ছিল ১৩ দশমিক ৫৪ সেন্টিমিটার। এই পয়েন্টে পানির বিপৎসীমার মাত্রা ১৩ দশমিক ০৫ সেন্টিমিটার।