আইএমএফের আর্থিক খাতে সংস্কার প্রস্তাব যৌক্তিক: প্রতিমন্ত্রী

বাংলাভাষী ডেস্কঃঃ

অর্থনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণ করতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফ থেকে সরকার যে ঋণ নিচ্ছে, সেটি দেশের জন্য ইতিবাচক হবে উল্লেখ করে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, আইএমএফ আমাদের বিদ্যুৎ ও জ্বালানিতে ভর্তুকি কমানোসহ আর্থিক খাতে যেসব সংস্কার প্রস্তাব করেছে সেগুলো যৌক্তিক। তাদের (আইএমএফ) পরামর্শে আর্থিক খাতে ধারাবাহিক সংস্কার করা হচ্ছে।

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সাউথ এশিয়ান ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) দুইদিনের বার্ষিক অর্থনীতিবিদ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মহাখালীতে ব্র্যাক সেন্টারে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী বলেন, গত কয়েক মাস ধরে অর্থনীতির যে চাপ, তার নেপথ্যে বৈশ্বিক পরিস্থিতির চেয়ে অভ্যন্তরীণ দায়ই বেশি। দেশের রাজনীতি রাজনীতিবিদদের হাতেই আছে। তবে সংসদে অনেক সদস্যই ব্যবসায়ী।

গত ৩১ জানুয়ারি বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন করে আইএমএফ। দুই দিন পরেই প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬২ লাখ ডলার জমা পড়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে। এই ঋণ নিতে সংস্থাটির ৩০টি শর্ত মানতে হয়েছে বাংলাদেশকে। এর অন্যতম হলো বিদ্যুৎ ও জ্বালানিতে ভর্তুকি কমানো।

সানেমের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক সেলিম রায়হান বলেন, আইএমএফের ৪৭০ কোটি টাকা ঋণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত না, বরং টার্নিং পয়েন্ট। এই ঋণ পাওয়ার ফলে এখন অন্যান্য দাতা সংস্থা বাংলাদেশের ব্যাপারে আস্থা পাবে। তাদের কাছে স্বল্প সুদে ঋণ পাওয়া সহজ হবে।

অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, ‘সামষ্টিক অর্থনীতিতে যেসব আঘাত এসেছে সেগুলোর কোনটিতে প্রাধান্য দেওয়া উচিত, তা খুজে বের করতে হবে। এ বিষয়ে সরকার ও প্রতিষ্ঠানগুলো কীভাবে কাজ করবে এবং আঞ্চলিক অর্থনৈতিক পরিমণ্ডলে এসব আঘাতের প্রভাব কেমন, তার উপর জোর দিতে হবে।’

অর্থনীতিবিদ ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, রিজার্ভের পরিমাণ কত, সেটি বড় কথা না। এক-দুই বছরে এটি কত কমে যাচ্ছে তা দেখতে হবে। কমে গেলে, তা চলতে দেওয়া যাবে না, একবার কমে যাওয়া শুরু করলে নিয়মনীতির মধ্যে থেকে তা সামাল দেওয়া আমাদের মতো আমদানি নির্ভর দেশের জন্য কঠিন হবে।

সম্মেলনে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, ঋণ দিতে এবার আইএমএফ বেশি শর্ত দেয়নি। কাজেই তা মানা সম্ভব হবে।