নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছে সেন্টমার্টিনবাসী

বাংলাভাষী ডেস্কঃঃ

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মোখার আতঙ্ক তীব্রভাবে ভর করেছে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ সেন্টমার্টিনের বাসিন্দাদের মধ্যে।

শুক্রবার সকাল থেকে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে সেন্টমার্টিন ছাড়ছেন বাসিন্দারা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বাড়ি-ঘরে গবাদিপশুসহ মূল্যবান সহায় সম্বল রেখেই নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছেন সেন্টমার্টিনের বাসিন্দারা। বসতবাড়ি ছেড়ে টেকনাফ শহরের দিকে চলে যাচ্ছেন অনেকে। এমন অবস্থায় মানুষের ভিড়ে নৌযানের সঙ্কট দেখা দিয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও সংবাদকর্মী জয়নাল আবেদীন বলেন, স্পিডবোট, মাছ ধরার নৌকাসহ বিভিন্ন নৌযানে করে শুক্রবার সকাল থেকে অন্তত তিন শতাধিক মানুষ সেন্টমার্টিন ছেড়ে টেকনাফে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছেন। যারা আর্থিকভাবে সচ্ছল তারা বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে আশ্রয় নিয়েছেন। অনেকে আত্মীয়-স্বজনের বাসা বাড়িতে উঠেছেন। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার মানুষ সেন্টমার্টিন ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছেন।

দ্বীপের আরেক বাসিন্দা আব্দুল মালেক বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখা আসছে শুনে সেন্টমার্টিন দ্বীপের মানুষ সবচেয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। কারণ, সেন্টমার্টিনে কোনো পর্যাপ্ত আশ্রয়কেন্দ্র নেই। এছাড়া দ্বীপের চারপাশে টেকসই বেড়িবাঁধও নেই। এছাড়াও এখানে খাদ্য গুদাম, চিকিৎসা সেবা, সী এ্যাম্বুল্যান্স নেই।

তিনি বলেন, এখানে আবহাওয়া অফিসের কার্যক্রমও নেই। ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রশাসনিক তৎপরতা চোখে পড়ার মতো নয়। সবমিলিয়ে দ্বীপের বাসিন্দাদের জানমাল চরম হুমকির মুখে। তাই সেন্টমার্টিনের মানুষ নিজে ও নিজের পরিবারের নিরাপত্তার স্বার্থে দ্বীপ ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়স্থলে ছুটছেন।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, দুর্যোগে স্থানীয়দের জন্য উপজেলায় সরকারি-বেসরকারি ৮৭টি আশ্রয়কেন্দ্রসহ শতাধিক হোটেল-মোটেল ডাকবাংলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বিশেষ জোন হিসেবে সেন্টমার্টিন, শাহপরীর দ্বীপের জন্য নৌ-বাহিনীসহ বিজিবি, পুলিশ, কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিস, মেডিকেল টিমসহ স্বেচ্ছাসেবীদের প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।

এদিকে শুক্রবার কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে দুই নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এসময় নৌযানসমূহকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী দু-একদিনের মধ্যে বাংলাদেশ উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে সুপার সাইক্লোনে রূপ নেওয়া ঘূর্ণিঝড় মোখা।

প্রসঙ্গত, রবিবার দুপুরে বাংলাদেশের কক্সবাজার ও মিয়ানমারের কায়াকপুরে আঘাত হানতে পারে প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোকা। এ সময় গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১৫০ থেকে ১৬০ কিলোমিটার।