যেসব সুবিধা পাবেন সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ

বাংলাভাষী ডেস্কঃঃ

বঙ্গভবন থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় নিয়েছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। বাংলাদেশের ৫২ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো রাষ্ট্রপতিকে এমন রাজসিক বিদায় জানানো হলো।

টানা দুই মেয়াদে ১০ বছরের বেশি সময় রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন শেষে সোমবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে তাকে সর্বোচ্চ সম্মান দিয়ে বিদায় জানান বঙ্গভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

অবসরে যাওয়ার পর দ্য প্রেসিডেন্টস (রেমিউনারেশন অ্যান্ড প্রিভিলেজেস) অ্যাক্ট, ১৯৭৫ (মে ২০১৬ পর্যন্ত সংশোধিত) অনুযায়ী তিনি অবসরভাতা ও চিকিৎসাসেবাসহ বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধা পাবেন।

আইন অনুযায়ী, কমপক্ষে ছয় মাস বা সম্পূর্ণ মেয়াদে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালনকারী ব্যক্তি অবসর নেওয়ার পর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সবশেষ বেতনের ৭৫ শতাংশ হারে মাসিক অবসরভাতা পাবেন।

আবদুল হামিদ সবশেষ রাষ্ট্রপতি হিসেবে মাসে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা বেতন পেয়েছেন। তাই তিনি অবসর গ্রহণের পর প্রতি মাসে অবসরভাতা হিসেবে পাবেন ৯০ হাজার টাকা।

আইন অনুসারে রাষ্ট্রপতি হওয়ার আগে কোনো ব্যক্তি অন্য কোনো চাকরি বা পদ থেকে অবসরে গিয়ে থাকলে তিনি কেবল যেকোনো একটি অবসরভাতা পাওয়ার যোগ্য হবেন। এক্ষেত্রে যদি রাষ্ট্রপতি অবসরভাতা গ্রহণ করে মারা যান, তবে তার বিধবা স্ত্রী অথবা বিপত্নীক স্বামী আমৃত্যু ওই অবসরভাতার দুই-তৃতীয়াংশ হারে প্রতি মাসে পাবেন। তবে অবসরে যাওয়া রাষ্ট্রপতি অবসরভাতার পরিবর্তে আনুতোষিকও (এককালীন অর্থ) গ্রহণ করতে পারবেন। এ জন্য তাকে প্রাধিকার অর্জনের এক মাসের মধ্যে আনুতোষিক গ্রহণের কথা জানাতে হবে। এ ক্ষেত্রে আনুতোষিকের পরিমাণ হবে এক বছরে প্রাপ্ত অবসরভাতার তত গুণ, যত বছর তিনি রাষ্ট্রপতি ছিলেন।

রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময়সীমা হিসাব করার ক্ষেত্রে আংশিক বছরকেও পুরো বছর ধরা হবে। কেউ যদি ছয় মাসের বেশি রাষ্ট্রপতি থাকার পর অবসরভাতা পাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ না করে মারা যান, তাহলে তার মনোনীত ব্যক্তি অথবা উত্তরাধিকারীকে দেওয়া হবে।

এ ছাড়া আইন অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি হিসেবে অবসর গ্রহণের পর আবদুল হামিদকে একজন ব্যক্তিগত সহকারী ও একজন অ্যাটেনডেন্ট, সরকার নির্ধারিত দাপ্তরিক খরচ, সরকারি অনুষ্ঠানে যেতে বিনামূল্যে যানবাহন, আবাসস্থলে টেলিফোন সংযোগ এবং নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত বিল অব্যাহতি দেওয়া হবে, মন্ত্রীর সমপরিমাণ চিকিৎসাসুবিধা, কূটনৈতিক পাসপোর্ট, বিনা ভাড়ায় সরকারি সার্কিট হাউস বা রেস্ট হাউসে থাকার সুবিধা পাবেন।

এ ছাড়া তার স্ত্রীও বিশেষ কূটনৈতিক পাসপোর্ট, বিনা ভাড়ায় সার্কিট হাউসে থাকার সুবিধা এবং মন্ত্রীর সমপরিমাণ চিকিৎসাসুবিধা পাবেন।

কিশোরগঞ্জের সন্তান বিদায়ী রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ২০১৩ সালের মার্চ মাসে অস্থায়ী ও ২৪ এপ্রিল প্রথম দফায় দেশের ২০তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন। এরপর ২০১৮ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে ২১তম রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেন। রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর বঙ্গভবনে ১০ বছরেরও বেশি সময় কেটেছে আবদুল হামিদের। গতকাল রোববার (২৩ এপ্রিল) ছিল তার শেষ কর্মদিবস।