সাকিব এখন গ্র্যাজুয়েট

বাংলাভাষী ডেস্কঃঃ

‘সত্যি কথা বলতে, ২০০৯ সালের দিকে জাতীয় দলে যখন খেলার ৩ বছর হয়ে গিয়েছে আমার ক্রিকেট খেলার, তখন আম্মা যখন ফোন করে জিজ্ঞেস করতেন যে পড়াশোনার কী অবস্থা। আজকে আমি খুবই খুশি, খুবই আনন্দিত এবং খুবই গর্বিত যে, ফাইনালি আমার স্বপ্ন একটা পূরণ হলো। খেলার মাঠে আমার হয়তো বেশ কিছু অর্জন আছে, তবে আমার কিন্তু এটা সবসময় স্বপ্ন ছিল’-এখানে বক্তা সাকিব আল হাসান। আমেরিকান ইন্টারন‌্যাশনাল ইউনির্ভার্সিটি অব বাংলাদেশের (এআইইউবি) ২১তম সমাবর্তনে যোগ দিতে এসে সাকিব এ কথা বলেন।

সাকিব এই অনুষ্ঠানে এসেছিলেন অতিথি হিসেবে নয়, প্রতিষ্ঠানের ছাত্র হিসেবে গ্র‌্যাজুয়েট পাশ করার সনদ দিতে সমাবর্তন অনুষ্ঠানে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি।

সাকিব যেন টাইম মেশিন। ঘড়ির কাঁটাকেও হার মানাতে চলেছেন। আজ ঢাকা। তো কাল মাগুরা। কিংবা দুবাই। অথবা অন‌্য কোনো খানে। একেক জায়গায় সাকিব একেক পরিচয়ে। ঘড়ির কাঁটার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে তার জীবন নামক নৌকা।

ইংল‌্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম‌্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজি খেলে রাতেই তিনি রওয়ানা দেন দুবাইয়ে। ফিরে আসেন একদিন পরই। তারপর দিন চলে যান সিলেটে। গিয়েই নেমে পড়েন অনুশীলনে। পরের দিন ১৮ মার্চ (রবিবার) নেমে পড়েন আয়াল‌্যান্ডের বিপক্ষে। দলের রেকর্ড ১৮৩ রানের জয়ে তার ব‌্যাট থেকে আসে সর্বোচ্চ ৯৩ রানের ইনিংস। মাঠে তিনি নেমেছিলেন মাথা ভর্তি সমালোচনা নিয়ে। দুবাইয়ে স্বর্ণের দোকান উদ্বোধন করতে গিয়েছিলেন পুলিশ পরিদর্শক হত‌্যা মামলার আসামীর আমন্ত্রণে। সেই সাকিবকে আজ আবার দেখা গেল ঢাকাতে। এভাবেই চক্রাকারের মত ঘুরছেন। আগামীকাল (২০ মার্চ) আবার সিলেটে নেমে পড়বেন আয়ারল‌্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডে খেলতে।

বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি) থেকে ২০০৯ সালে উচ্চমাধ‌্যমিক পাশ করার পর ২০০৯-১০ সেশনে বিবিএতে ভর্তি হয়েছিলেন এআইউইবিতে। সাকিবের গ্র‌্যাজুয়েট সম্পন্ন করতে সময় লেগেছে ১৪ বছর। মূলত আর্ন্তজাতিক ক্রিকেটের ব‌্যস্ততার কারণেই তার এত সময় লেগেছে।

খেলার মাঠে সাকিব দেখেলেই তার ভক্ত সমর্থকরা তার নামে জয়োধ্বনি দিতে থাকেন। কিন্তু আজ সমাবর্তন অনুষ্ঠানেও ছাত্র-ছাত্রীরা সাকিব সাকিব ধ্বনি তুলেছিলেন। এ সময় আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন সাকিব। তাকে বেশ নার্ভাস দেখাচ্ছিল। তিনি বলেন, ‘আমি প্রশ্নোত্তর পর্ব ভালো পারি। তবে বক্তৃতা ভালো পারি না। বক্তব্য দিতে আমার খুব সমস্যা হয়। আমি খুবই নার্ভাস। এখন এমন মনে হচ্ছে, টেস্ট অভিষেকে যখন ক্যাপটা পেয়েছিলাম, তখন যে অনুভূতি ছিল, আজকে এরকমই মনে হচ্ছে।’

সহপাঠি ও ছাত্র-ছাত্রীদের পরামর্শ দিয়ে সাকিব বলেন, ‘খুব বেশি কিছু বলার নেই। আমি নিশ্চিত আপনাদের জীবন সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। শুধু একটা কথা বলতে চাই, যখন আপনারা স্বপ্ন দেখবেন, স্বপ্নটা বড় করে দেখবেন। স্বপ্নকে টার্গেট করে সততার সঙ্গে কাজ করবেন। আমি নিশ্চিত আপনাদের সবার স্বপ্ন পূরণ হবে এবং আমরা সবাই মিলে বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব।’