সাকিব-তৌহিদ-মুশফিক রসায়নে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান

বাংলাভাষী ডেস্কঃঃ

সাকিবের ৯৩ ও অভিষিক্ত তৌহিদ হৃদয়ের ৯২ রানের ইনিংসের সঙ্গে মুশফিকুর রহিমের ২৬ বলে ৪৪ রানের ঝড়ো ইনিংস আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে বাংলাদেশকে ৮ উইকেটে ৩৩৮ রানের মজবুত সংগ্রহ এনে দিয়েছে।

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে এটি বাংলাদেশের শুধু প্রথম তিনশোর বেশি ও দলগত সর্বোচ্চ রানই নয়। যেকোনো দলের বিপক্ষেও দলগত সর্বোচ্চ রান। আগের সর্বোচ্চ রান ছিল ২০১৯ সালের বিশ্বকাপে নটিংহ্যামে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৮ উইকেটে ৩৩৩ রান। 

বাংলাদেশের সংগ্রহ যে দলগত রানের নতুন রেকর্ড গড়বে তা কিন্তু টস হেরে ব্যাট করতে নামার পর বোঝা যায়নি। ৮১ রানে ৩ উইকেট হারিয়েছিল ১৬.৩ ওভারে। এরপর সাকিব ৮৯ বলে ৯৪, অভিষিক্ত তৌহিদ হৃদয় ৮৫ বলে ৯২ ও মুশফিকুর রহিম ২৬ বলে ৪৪ রানের ইনিংস খেললে বাংলাদেশের সংগ্রহশালায় নতুন রেকর্ডের নাম উঠে।

ইনিংসের শুরুতেই আউট হয়ে যান অধিনায়ক তামিম ইকবাল। তৃতীয় ওভারে মার্ক অ্যাডওয়ারের অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বল ড্রাইভ খেলতে গিয়ে প্রথম স্লিপে পল স্টার্লিংয়ের হাতে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন ৩ রানে।

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে প্রথম ৫ ম্যাচে টানা ব্যর্থ হওয়ার পর শেষ ম্যাচে রানের দেখা পাওয়া লিটন দাস আবার এই ম্যাচে রান করতে পারেননি। দারুন সূচনা করার পর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন আরেকটি বড় ইনিংস খেলার। কিন্তু ৩১ বলে ১ ছক্কা ও ২ চারে ২৬ রান করে তাকে থেমে যেতে হয় কার্টিস ক্যাম্পায়ারের বলে শর্ট কাবারে পল স্টার্লিংয়ের হাতে ক্যাচ দিয়ে।

পাওয়ার প্লের ১০ ওভারে দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে বাংলাদেশ একটু চাপে ছিল। সাম্প্রতিক সময়ে দারুণ ফর্মে থাকা ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের সেরা খেলোয়াড় নাজমুল শান্ত তার রান করার ধারাবাহিকতা ধরে রাখার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। সঙ্গি হিসেবে পেয়ে যান চারে নামা সাকিবকে। আগেরদিন প্রেস কনফারেন্স কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে জানিয়েছিলেন দলের সেরা খেলোয়াড় সাকিবের ব্যাটিং পজিশন উন্মুক্ত।

তাই দেখা গেল আজ তাকে চারে ব্যাট করতে দেখে।৩৪ বলে ১ চারে ২৫ রান করে ম্যাকব্রাইনের বলে বোল্ড হয়ে যান তিনি। দলের রান তখন ৩ উইকেটে ৮১। বাংলাদেশের চাপ একটু বেড়ে যায়। সাকিব ও অভিষিক্ত তৌহিদ সেটিকে আরও ঘনিভূত হতে দেননি। দুই জনে চতুর্থ উইকেট জুটিতে যোগ করেন ২০.৫ ওভারে ১৩৫ রান করেন। তাদের এই রানই বাংলাদেশের বড় সংগ্রহের পথ তৈরি করে দেয়।

নাজমুল আউট হলেও সাকিব কিম্তু তার ইনিংসকে টেনে নিয়ে যান হাফ সেঞ্চুরিতে, পরে সেন্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়ে খেলেন ৮৯ বলে ৯ চারে ৯৩ রানের ইনিংস। ৬৫ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ক্যারিয়ারের ৫৩তম ও টানা তৃতীয় হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তার শেষ দুইটি ইনিংস ছিল ৫৮ ও ৭৫ রানের। সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়ে তিনি আউট হন গ্রায়াম হিউমের বলে উইকেটের পেছনে টাকারের হাতে ধরা পড়ে। এই নিয়ে তিনি দ্বিতীয়বার নব্বইর ঘরে আউট হলেন। এর আগে আউট হয়েছিলেন ৯৭ রানে। এ ছাড়া ৯৬ ও ৯২ রানে দুইবার অপরাজিত ছিলেন।

তৌহিদ হৃদয় অভিষেককে রাঙিয়ে তুলেন ৯২ রানের ইনিংস খেলে। সাকিবের মতো তিনিও সেঞ্চুরি বঞ্চিত হন। তিনি সেঞ্চুরি করতে পারলে অভিষেকে সেঞ্চুরি করার কীর্তি গড়তে পারতেন। হাফ সেঞ্চুরি করেন ৫৫ বলে ৫ চারে।

তৌহিদ আউট হওয়ার আগে মশফিককে নিয়ে পঞ্চম উইকেট জুটিতে দ্রুত যোগ করেন ৮.১ ওভারে ৭০ রান। মুশফিক ২৬ বলে ৩টি করে চার ও ছয় মেরে ৪৪ রান করে গ্রায়াম হিউমের বলে ম্যাকবার্নির হাতে ধরা পড়েন। তার এক বল পরেই সেই গ্রায়ামের বলেই বোল্ড হয়ে যান। তার ৮৬ বলের ইনিংসে ছিল ২টি ছক্কা ও ৮টি চার।

পরে ইয়াসির আলী ১০ বলে ১টি করে চার ও ছয় মেরে ১৭, তাসকিন ১ ছক্কায় ও নাসুম ২ চার ৭ বলে ১১ রান করে করলে বাংলাদেশ ৮ উইকেটে ৩৩৮ রানের নতুন দলগত রেকর্ড গড়ে।

আয়ারল্যান্ডের গ্রায়াম হিউম ৬০ রানে নেন ৪ উইকেট।