ওগো নজরুল

ওগো নজরুল

শামছুন ফৌজিয়া 

——————————-

ওগো নজরুল, ঘুম ভাঙানিয়া কবি 

তোমার ভোর হল দোর খোল’ পড়ে চোখ মেলে তোমার সকাল বেলার পাখি হতাম মনে মনে !

তোমার ‘বিশ্বটাকে আপন হাতের মুঠোয় আনার সংকল্পে কিশোর মনে স্বপ্ন চিকচিক করত! খুকীর সাথে কাঠবেড়ালী কিংবা লিচুচোর সেজে কতবার মালির পিটুনী খেয়েছি !!

ওগো নজরুল বাংলার বুলবুল কবি,

তোমার বিদ্রোহী পড়ে দৃঢ় সংকল্পে হাত মুষ্টিবদ্ধ হত, শিকল ভাঙার গানে ঔপনিবেশিকতা হতে মুক্তির নেশায় কতবার হাত নিশপিশ করত! 

তোমার রাজবন্দীর জবানবন্দী পড়ে কবি ও কবিতার মর্ম বুঝেছি প্রাণে। কবির প্রাণে ভগবান থাকেন আর কলম হবে মানবতার প্রতীক জানলুম।

ওগো কবি, তুমি যে সাহিত্যাকাশে ধুমকেতুর মত উদিত হয়েছিলে—

তোমার লিখনী দিয়ে জাগিয়েছিলে ঘুমন্ত প্রাণ, আঘাত দিয়েছিলে বলে কারাবরণ হয়েছিল !! এসব কতজন পারে ??

কবি তুমিই তো প্রথম ঐ সময়ে নারীমুক্তির গান গাইলে , নারীকে দিলে সম্মান । তুমিই তো প্রথম সাম্যের গান গাইলে , ধনী গরীব বিভেদ নয় মানুষের মর্যাদা দিতে আহ্বান করলে —

ওগো কবি তোমা হতে জানলুম কবিসত্তা সার্বজনীন । তুমি তাই রচিলে শ্যামাসংগীত , ইসলামী গজল , সাম্যের গান। তুমি তো মানবতার কবি , প্রেমের কবি। 

তোমার প্রথম প্রেম নার্গিসকে দিলে , পথ চলিতে যদি চকিতে ... কত গান । 

বাতায়ন পাশে গুবাক তরুর সারি পড়ে কেন যেন এক অজানা বিরহে কবিকে খুঁজে পাই। তুমি তো প্রিয়ার খোঁপায় তারার ফুলে দিলে ভরিয়ে ! প্রিয়ার আলগা করা খোঁপার বাঁধনে ফেঁসে গেল দিল ।

ওগো কবি তুমি ক্ষণকালের ধ্রুবতারা। দারিদ্রতা তোমাকে মহান করেছে , কর্ম তোমাকে আত্মবিশ্বাসী করেছে। তাইতো তোমার গানে এখনো নওযোয়ানরা বাম ডান মার্চ করে। তোমার কোরাস, গজল, গান , নাটক , প্রবন্ধ তোমাকে করেছে অমর।

বহুভাষিক শব্দে তুমি অনন্য রচিলে ! দেশপ্রেম তোমার অন্তরে সদা। কি এক দূরারোগ্যে তুমি অভিমানীর মত চুপ হয়ে গেলে !! এরপর একেবারেই চলে গেলে আমাদের ফেলে । 

মসজিদের আযান শুনতে পাও তুমি চিরনিদ্রায় থেকে।তুমি চিরতরে দূরে চলে গেলে ও ভুলিতে পারবনা মোরা তোমাকে। 

New York,USA