জীবনের গল্প
মোঃ হাবিবুর রহমান
দেহের কোন অংশে যখন সামান্যতম ব্যাথা অনুভূত হয় তখন এ ব্যথা মুহূর্তের মধ্যেই সারা দেহকে জানিয়ে দিয়ে বলে যে, অনুভূত ব্যথাস্থলটি দেহের ক্ষুদ্র কোন অংশ হ'লেও সেটাও কিন্তু দেহেরই একটা বড় গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ।
এ ধরায় এমন কোন মানুষ আছে কি যে কখনও তার নিজ জীবদ্দশায় এধরণের সমস্যায় ভোগেনি? জীব বা প্রাণী মাত্রই বোধ ক'রি এ অনুভূতি ও ব্যথা জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে অনুভব ক'রেছে।
তদ্রুপ, পৃথিবীর সবচাইতে ধনী ব্যক্তিটি কি হলফ ক'রে কখনও ব'লতে পারে যে, অধিক সম্পদের মালিক হবার কারণে সে কোন ধরনের ভোগান্তিতে পড়েনি।
পর্বতসম সম্পদ থাকলেও কিন্তু সামান্যতম অংশ ক্ষতি বা কোন সময় খোয়া গেলে মনে বড় অশান্তি সৃষ্টি হবে এটাই খুব স্বাভাবিক।
একই এলাকায় কারও পরিচিত কোন ব্যক্তির হঠাৎ মৃত্যু সংবাদ জানবার সাথে সাথেই মনটা ব্যথিত হয়। তবে কষ্ট বা দুঃখ পাবার মাত্রাটা কমবেশী হবে এটাই স্বাভাবিক।
আপন স্বজনের বেলায় এর মাত্রা শতগুণ বা ততোধিক অধিক হবে এটা খুবই স্বাভাবিক (আল্লাহতা'আলা না করুন)।
ছোট ছোট অনুভূতিগুলো কখনও কখনও মানুষকে বড় ক'রে নাড়া দেয়। আবার ছোট ছোট ব্যথা ও বেদনাসমূহ মানুষের জন্যে কিন্তু বেশী বেশী মনোকষ্টের কারণ হ'য়ে দাড়ায়। তদ্রুপ, কিছু কিছু তুচ্ছ ঘটনা যা কিন্তু মানুষের মনে বড় দাগা দেয় তাই সে কস্মিনকালেও সে বেদনাটি ভুলতে পারে না।
সুখ দুঃখ নিয়েই জীবন আর জীবন তো একটাই। মানুষ শারীরিক বা দৈহিক আঘাতের চেয়ে কোন কোন সময় মানসিক অতি ক্ষুদ্র আঘাতেই বেশী কষ্ট পেতে পারে ও এ আঘাতটি জীবদ্দশায় কেউ কেউ আবার না ভুলে তা আজীবন মনে রাখে।
ছোট মানসিক আঘাতের মাত্রাটা যদি শক্তিশালী এটম বোমের মত হ'য়ে থাকে ও দৈহিক আঘাতটি যদি স্বাভাবিক মাত্রার বোমসম হয় তবে সেটা মানুষ মনে রাখবে চিরদিন একদম আমরণ পর্যন্ত আর এটাই খুব স্বাভাবিক।
সুখ আর দুঃখ নিয়েই জীবন। সুখ না থাকলে হয়ত দুঃখ বুঝা যেতো না তেমনি দুঃখ না পেলে মানুষ সুখের তৃপ্তিটা শতভাগ অনুভব ক'রতে পারতো না। সুখ যখন দক্ষিণ মেরুতে তখন দুঃখটি পালিয়ে কিছু দিনের জন্য শীতনিদ্রায় চ'লে যায় উত্তর মেরুতে। আবার দুঃখ যখন দক্ষিণ মেরুতে তখন সুখ সাময়িকভাবে চ'লে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে যোজন যোজন দূরে।
এভাবেই জীবনের পর জীবন আসে আর যায় চ'লতে তাকে বিশ্ব চরাচর।