মেনে নাও আর মানিয়ে নাও

মেনে নাও আর মানিয়ে নাও

গোলাম মোস্তফা 

বাবা নিতান্তই গরীব,কৃষিজীবী

মাও আটপৌরে ঘরনী

আয় রোজগারে তেমন ঔজ্জ্বল্য নেই

দিনের কর্ম দিনে না করলে চুলো জ্বলে না।

ছেলেটা আর মেয়েটা খুব দেখন সুন্দর

মেধাবী আর মেধাবীনী

আগেকার দিনের গৌরি দান প্রথা

আট বছরেই অরক্ষণীয়া মেয়ে

দান করে কুল রক্ষা হোত।

আটপৌরে জীবন

মেয়ে ১০ ছেলে ১৩

বিয়ে হল মেয়ে আর এক মজুরের ঘরে,

মা মেয়েকে বলে," যথেষ্ট জ্ঞান বুদ্ধি তোর 

কোন কিছুতেই যেন অভিযোগ না আসে

সব কিছু মেনে নিতে হয়।

মেনে নিও, 

সংসারে বাবা মা কেউ না

সব কিছু মানিয়ে নিতে হয়।"

মেয়ে যা বোঝার বুঝে নিল

সবে কৈশোর উত্তীর্ণ বর আবেগ আর উদ্দীপনায় ভরপুর

বালিকা বধুর আব্দার মেনে নিল,

বালিকা বধু স্কুলের খাতায় আবারও নাম লেখাল,

প্রতিদিন নয় মাঝে মাঝে উপস্থিত হবার মুসলেকা দিল।

দশমের গন্ডি পার না হতে হতেই মা বনে গেল

নবজাতিকা আর তার মায়ের জীবন সংগ্রাম শুরু,

বরের তখন পত্নী প্রেম তলানিতে,

কন্যার পিতা হতে চায়নি সে

তাই অত্যাচার নিপীড়নে অসহ্য শারিরীক নির্যাতনে 

ঘরের মায়া ত্যাগ করে পথে নামল।

মায়ের দেওয়া উপদেশ মেনে নিয়েও পথ ই হল ঠিকানা,

অতি কষ্টে বাচিয়ে রাখা সোনার নাকের নথ বিক্রি হল,

শুরু হল জীবন সংগ্রাম,

পানবিড়ি দিয়ে শুরু

বড় হতে শুরু করলো মেয়ে, সাথে সাথে দোকান। 

এখন আর পথে নয় অট্রালিকাতেই বসবাস

মা মেয়ের দিন রাত্রি দুজনাতেই সীমাবদ্ধ, 

নিরন্ন নয়, অন্নদাতা 

জীবন সংগ্রামে ধ্রুবতারা।