প্রহর শেষের আলোয় রাঙা  সেদিন চৈত্রমাস  তোমার চোখে দেখেছিলাম  আমার সর্বনাশ (অণুগল্প)  

প্রহর শেষের আলোয় রাঙা   সেদিন চৈত্রমাস   তোমার চোখে দেখেছিলাম   আমার সর্বনাশ (অণুগল্প)  

রাবেয়া পারভীন

প্রহর শেষের আলোয় রাঙা 

সেদিন চৈত্রমাস 

তোমার চোখে দেখেছিলাম 

আমার সর্বনাশ  

সেদিন ছিল চৈত্রের শেষদিন আর বসন্তেরও শেষ দিন । দিনের আলো নিভে গিয়ে আকাশে চাঁদ উঠেছিল সেদিন । আমরা পাশাপাশি হাঁটছিলাম বাগানের রাস্তা ধরে। গাছের ফাঁকে চাঁদ দেখা যাচ্ছিল , আমার বুকের ভিতরে তখন ফাল্গুনী হাওয়ার মাতামাতি ।ইচ্ছে করছিল তোমার হাত ধরে হেঁটে যাই অজানার উদ্দেশ্যে । আমি তোমার হাতটি ধরতে চাইলাম তুমি সংকোচে টেনে নিলে হঠাৎ করেই মনের ভিতরে একটা ধাক্কা লাগলো কেন জানি মনে হয়েছিল তুমি একেবারেই চাওনা আমার হাত ধরতে । দেখা করতে এসেছো সেই বেশী । তবুও আমার ভালোবাসার মন তোমাকেই দেখছিল । একটা গাছের নীচে আমরা বসলাম তোমার মুখে কিছু শুনতে চাইছিলাম কিন্তু কেন যেন মনে হচ্ছিল আজকে এই ক্ষনটি তুমি চাওনি তোমার অন্যমনস্কতা সেটাই বুঝিয়ে দিয়েছিল আমাকে । আসলে তোমার ভেতরের তুমিকে চিনতে আমার অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল । আজকে আবার চৈত্রের শেষ দিনে মনে পড়ছে সব কথা ! যদি অবহেলাই করবে তবে ছল করে কেন বলেছিলে " ভালোবাসি "? তোমার সেই মিথ্যে ছলনায় ভুলেছিলাম বলে এখন আমি আমাকে ক্ষমা করতে পারিনা । বারবার মনে হয় , কি অপরাধ ছিল আমার ? কেন এমন করলে ? স্মৃতির বোঝা যে অনেক ভারী , বহন করা অনেক কষ্ট ! ভিষন কষ্ট! সে কষ্টের ছিটেফোঁটা আঁচও হয়তো তোমার বুকে কোনদিন লাগবেনা কারন তুমিতো কারো ভালোবাসার সম্পত্তি নও । তুমি মুক্ত বিহঙ্গ উড়ে বেড়াও নিজের ইচ্ছেমতো । বারবার বসন্তকাল আসবে, আসবে চৈত্রের শেষ দিনটিও , চৈতালী বাতাস হুহু করে বইবে আমার বুকের ভিতর , কিন্তু তুমি আর আসবেনা । আমি আর আশাও করিনা । যতকাল বাঁচবো ছোট ছোট ক্ষনগুলু ধরে রাখবো দু চোখের পাতায় । এই পাওয়াটুকু একান্তই আমার ।